News Bangla 24 BD | ফেসবুকে আপনি কি নিরাপদ?
News Head

যদি আপনার ফেসবুক দেয়ালে বা ম্যাসেজে বিব্রতকর কিছু ভিডিও বা ছবি চলে এসেছে! তাও আবার আপনার বন্ধু তালিকায় থাকা কারও কাছ থেকে। আপনার বন্ধু তালিকায় থাকা অন্যরা যখন আপনার দেয়ালে এসে সেই ভিডিও বা ছবিগুলো দেখে বিব্রত হবেন। আবার যাঁর মাধ্যমে ছবিগুলো এসেছে, তাঁর সম্পর্কেও আপনার বিরূপ ধারণা হতে পারে। এ ছাড়া আপনার অতি ব্যক্তিগত ছবি কিংবা তথ্য ফেসবুকে আছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ ব্যবহার করলেও আপনি বিপদে পড়তে পারেন। দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেস্কটপ ও মোবাইল ফোন থেকে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন সেবা ব্যবহার করছেন অনেকেই। ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান জানানোর ওয়েবসাইট অ্যালেক্সার তথ্যমতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো ফেসবুক। ব্যবহারের সময় যথেষ্ট সতর্ক না হওয়ায় ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি অনাকাঙ্ক্ষিত কারও ব্যবহার করা, অ্যাকাউন্ট বেহাত (হ্যাকড) হওয়ার মতো ঘটনাগুলো বাড়ছে। অথচ সাধারণ কিছু কৌশল জানা থাকলে এ রকম ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

গোপন নম্বর বা পাসওয়ার্ড
ফেসবুকে গোপন নম্বর বা পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। নিয়মিতভাবে কিছুদিন পরপর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা উচিত। আবার পরিবর্তন করা হলেও এমন কিছু ব্যবহার করা উচিত না, যেন অন্য কেউ সহজেই অনুমান করে বুঝে ফেলতে পারে। ফোন নম্বর, জন্মতারিখ, বাসার ঠিকানা, এলাকার নাম, দেশের নাম, রোল নম্বর, নিজের পরিচিত কোনো মানুষ বা বন্ধুর নাম ইত্যাদি কখনোই পাসওয়ার্ড হিসাবে ব্যবহার করা উচিত না।

প্রাইভেসি সেটিংস
ফেসবুকের প্রাইভেসি সেটিংসগুলো সঠিকভাবে নির্ধারণ করা আছে কি না, সেটি সহজেই পরীক্ষা করার জন্য একটি অপশন যোগ করা হয়েছে। লগ–ইন করার পরে ওপরের মেনু থেকে তালার মতো দেখতে আইকনে ক্লিক করলে প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা-সংক্রান্ত সাধারণ করণীয়গুলো দেখা যাবে। Privacy Checkup অপশনটি ব্যবহার করে প্রাইভেসি সেটিংসগুলো যাচাই করা যাবে। www.facebook.com/settings?tab=privacy ঠিকানা থেকে অন্য সেটিংসগুলো নির্ধারণ করা যাবে।
প্রাইভেসি সেটিংসে কোনটার মানে কী?
Who can see my stuff?
আপনার প্রকাশ করা তথ্যগুলো কারা দেখতে পাবেন, সেটি নির্ধারণ করা যায় এখানে। সাধারণভাবে Friends নির্বাচন করা উচিত।
Who can contact me?
কোন ব্যবহারকারী ইনবক্সে বার্তা পাঠাতে পারবেন, সেটি নির্বাচন করা যাবে এখানে। এ ছাড়া কারা আপনাকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠাতে পারবেন, সেটিও নির্ধারণ করা যায় এই অংশ থেকে।
How do I stop someone form bothering me?
ফেসবুকে আপনি কাউকে ব্লক করতে চাইলে এই অংশ থেকে সহজেই কাজটি করা যাবে। যাঁকে ব্লক করা হচ্ছে, সেই ব্যবহারকারী আপনার কোনো তথ্য দেখতে পাবেন না এবং আপনিও তাঁর কোনো তথ্য দেখতে পারবেন না।
নিরাপত্তা
www.facebook.com/settings?tab=security ওয়েব ঠিকানা থেকে সরাসরি সিকিউরিটি সেটিংস পাতায় যাওয়া যাবে।
Log–in Alerts: নতুন কোনো যন্ত্র থেকে লগ–ইন করা হলে ই-মেইল এবং মোবাইল ফোনের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
Log–in Approvals: নতুন যন্ত্র থেকে লগ–ইন করা হলে এসএমএসের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
Code Generator: নতুন লগ–ইন করার সময় ফেসবুক অ্যাপ থেকে নিরাপত্তা সংকেত ব্যবহার করে
লগ–ইন করতে পারবেন।
App Passwords: অ্যাপের ক্ষেত্রে মূল পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করে অ্যাপের জন্য নির্ধারিত অন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা।
Trusted Contacts: বন্ধু তালিকার বিশেষ কয়েকজনকে এই তালিকায় যোগ করা যাবে, কখনো যদি আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে সমস্যা হয়, তবে তাঁদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিজেদর অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করা যাবে।
Browsers and Apps: কোন কোন অ্যাপ বা ব্রাউজার থেকে নিয়মিত ব্যবহার করা হয়।
Where You’re Logged In: বর্তমানে কোন কোন যন্ত্র থেকে লগইন আছেন, সেটি যাচাই করা।
Deactivate Your Account: অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা।
টাইমলাইন ও ট্যাগ
ফেসবুক সেটিংস পাতার Timeline and Tagging মেনু থেকে অথবা সরাসরি এই www.facebook.com/settings?tab=timeline থেকে টাইমলাইন ও ট্যাগ-সংক্রান্ত সেটিংগুলো নির্ধারণ করা যাবে। পাতার সেটিংসগুলো নিচের মতো তিনটি ভাগে আলাদা করা থাকে।
Who can add things to my timeline? কারা আপনার প্রোফাইলে কোনো কিছু দিতে পারবেন, সেটি নির্ধারণ করা যাবে এখানে। পোস্টগুলো সবার কাছে প্রকাশের আগে আপনার অনুমতি লাগবে, সে ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে।
Who can see things on my timeline?
টাইমলাইনে অন্য কেউ পোস্ট করলে বা কোনো পোস্টে আপনাকে ট্যাগ করা হলে কারা সেই পোস্টগুলো দেখতে পারবেন, সেটি নির্বাচন করে দেওয়া যাবে এখানে। পাশাপাশি কোনো নির্দিষ্ট ব্যবহারকারী অথবা অন্য সবাই আপনার প্রোফাইলের কোন কোন অংশ দেখতে পাচ্ছেন, সেটিও যাচাই করা যাবে এখান থেকে।
How can I manage tags people add and tagging suggestions? কোনো ছবি বা পোস্টে ট্যাগ করা হলে অন্য সবার কাছে প্রকাশের আগে আপনি রিভিউ করে অনুমতি দেওয়ার অপশনটি সক্রিয় করতে পারবেন এখান থেকে। পাশাপাশি ট্যাগ করা পোস্টগুলো দেখা এবং কারা ট্যাগ করার জন্য সাজেশন পাবেন, সেটিও নির্ধারণ করে দেওয়া যেতে পারে।

ফিশিং সাইট
ফেসবুক ছাড়া অন্যান্য অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লগ–ইন করা থেকে বিরত থাকা উচিত। অনেক সময় বিভিন্ন ওয়েব ঠিকানা বা লিংক খোলার সময় ফেসবুক ব্যবহারকারী নাম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করতে অনুরোধ করে। এই পদ্ধতিতে অনেক সময় ফেসবুকের ব্যবহারকারী নাম ও পাসওয়ার্ড অন্যরা চুরি করতে পারেন।

নতুন কোনো যন্ত্র থেকে লগ–ইন
কখনো কখনো হয়তো সাইবার ক্যাফে, অন্যের কম্পিউটার কিংবা মুঠোফোন থেকে ফেসবুকে ঢোকার (লগ–ইন করা) প্রয়োজন হতে পারে। নতুন কোনো যন্ত্র থেকে লগ–ইন করতে হলে যার যন্ত্র বা যে কম্পিউটার থেকে লগইন করা হচ্ছে, তা নির্ভরযোগ্য কি না ভেবে দেখুন। লগ–ইন করা পর ‘remember you’ বাটনে ক্লিক করে অথবা ব্রাউজারের ‘Save Password’ অপশন ব্যবহার করে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করবেন না। কারণ, এর ফলে পরবর্তী সময়ে অন্য ব্যবহারকারী এই পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন।

ফেসবুকে কী প্রকাশ করবেন, কী করবেন না
ফেসবুকে কোনো কিছু প্রকাশ করা, যেমন: কোনো লেখা বা ছবি দেওয়া, অন্যের কোনো পোস্ট শেয়ার করার আগে ভেবে দেখুন আপনি সত্যিই সবার সামনে এটি জানাতে চাইছেন কি না। প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার বন্ধুদের সবাই এটি দেখতে পাবেন এবং হয়তো তাঁরা এর পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত জানাবেন।

নোটিফিকেশন নিয়ন্ত্রণ
ফেসবুক, ই-মেইল, মোবাইল ফোন ও এসএমএসের মাধ্যমে কী কী নোটিফিকেশন পেতে চান, সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে নোটিফিকেশন সেটিংসের পাতা (www.facebook.com/settings?tab=notifications)
থেকে।

ফেসবুকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা
ফেসবুকে নিয়মিতই বন্ধু যোগ করার অনুরোধ (ফ্রেন্ড রিেকায়েস্ট) আসে। তবে বন্ধু যোগ করার আগে নিশ্চিত হয়ে দেখে নিন সত্যিই তিনি আপনার পরিচিত কি না। কিংবা প্রোফাইলটি সত্যিই তাঁর কি না। বন্ধু যোগ করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আপনার আগের বন্ধুদের মতো আপনার ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য, ছবি, পোস্ট দেখা এবং সেখানে মন্তব্য করার সুযোগ পাবেন। তবে যেকোনো সময়ই বন্ধু তালিকা থেকে যে-কাউকে সরিয়ে দেওয়া যায়। তাই বন্ধু তালিকাটি এখন আবার যাচাই করে নেওয়া যেতে পারে।

ফেসবুক কেন ব্যবহার করছেন
.ফেসবুক কেন ব্যবহার করছেন, সেটি নিজে আরও একবার ভেবে নিন। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, নিজের পছন্দগুলো সবাইকে জানিয়ে দেওয়া, ব্যক্তিগত সাফল্য, বিভিন্ন কার্যক্রম প্রকাশের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়াও আরও অন্য কাজে একটি সহায়ক মাধ্যম হতে পারে এই ফেসবুক। তবে কী করছেন, সেটি নিশ্চিত হয়েই করা উচিত। অন্যথা কোনো কিছু প্রকাশ করার পরে মনে হতে পারে সেটি প্রকাশ না করাই ভালো ছিল।

ফেসবুকে অ্যাপ ব্যবহার করা
গেমসহ বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে ফেসবুকে। নতুন কোনো ফেসবুক অ্যাপ ইনস্টলের সময় দেখে নেওয়া উচিত এটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের কী কী তথ্য দেখা বা ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যবহারকারীর এবং তাঁর বন্ধুদের ওয়ালে কোনো কিছু পোস্ট করে কি না তাও দেখা উচিত। পুরো নিশ্চিত হয়ে অ্যাপ ইনস্টল করুন।

আরো টিপস
১। Keep me logged in: আপনি ফেসবুকে লগইন করার সময় লগইন বক্সের ‘Email or Phone’ এর নিচে একটি ‘Keep me logged in’ অপশন দেখতে পারবেন যেখানে ‘টিক’ চিহ্ন দিয়ে সুবিধাটি ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ ইন করার সময় এই অপশনটিতে ‘টিক’ চিহ্ন দিয়ে থাকেন তবে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হবার সম্ভবনা বেড়ে যায়। আপনি যদি এই সুবিধাটি ব্যবহার করতেই চান তবে শুধু মাত্র আপনার ব্যক্তিগত কম্পিউটারেই ব্যবহার করুন যদি সেই কম্পিউটারটি অন্য কেউ ব্যবহার না করে।

২। কখনোই পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন নাঃ এটি মূলত আমার কাছে একটি স্থূল পদ্ধতি কেননা বর্তমানে যে কোন অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরাই অনেক বেশি সচেতন এবং তাদের পাসওয়ার্ড অন্য কারও সাথে শেয়ার করে থাকেনা। তবে আপনি যদি ব্যতিক্রমধর্মী হয়ে থাকেন তবে আজ থেকে পাসওয়ার্ড শেয়ার করা বন্ধ করুন। আপনার পাসওয়ার্ড অন্য কেউ জানলে সে হ্যাক না করলেও মাঝে মাঝে কৌতুহলের বসে আপনার অ্যাকাউন্টটে ঢুঁ মেরে যেতে পারে যার ফলে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের বেজে যেতে পারে বারোটা!!

৩। পাবলিক প্লেসে ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে লগ ইন না করাই ভালোঃ ধরুন আপনি আপনার একটি ফ্রেন্ডের বাসায় আছেন অথবা একটি সাইবার ক্যাফেতে বসে আছেন। এখন আপনার বন্ধু যদি খুব বেশি বিশ্বাসযোগ্য না হয়ে থাকে তবে তার কম্পিউটার থেকে ফেসবুকে লগইন না করাই শ্রেয়। আর এই ‘বিশ্বাসের’ কথাটি সাইবার ক্যাফের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবুও যদি আপনার পাবলিক প্লেসে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ ইন করার একান্তই প্রয়োজন হয়ে থাকে তবে নিচের টিপস গুলো মনে রাখবেন।

• আপনি যখন আপনার বন্ধুর বা সাইবার ক্যাফের বা অন্য যে কারও কম্পিউটারের মাধ্যমে ফেসবুকে লগইন করবেন তখন ‘Keep me logged in’ অপশনটিতে টিক চিহ্ন দেয়া থেকে বিরত রাখবেন। এর কারন প্রথম পদ্ধতিতেই বলা হয়েছে। আর এই পদ্ধতিটি শুধু মাত্র ফেসবুকের জন্যেই নয়, বরং ইন্টারনেট ভিত্তিক যে কোনো অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

• আপনি যে কম্পিউটারটি দিয়ে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগইন করছেন সেই কম্পিউটারটিতে ‘Facebook Password Decryptor Software’ ইন্সটল করা থাকতেই পারে যা কিনা আপনার ফেসবুকে লগইন করার সকল তথ্য সংগ্রহ করে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই, লগইন করার সময় একটু চেক করে দেখুন যে এরকম কোন সফটওয়ার বা কী-লগার ইন্সটল করা আছে কি না।

• সবসময় ব্যবহার করুন শক্তিশালী এবং লম্বা একটি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে যেন কেউ সহজে পাসওয়ার্ডটি অনুমান করে নিতে না পারে।

• তবে একটি লম্বা বা বড় শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কিন্তু আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষা করতে যথেষ্ট নয়। কেননা, হ্যাকররা হ্যাক করার সময় ‘ডিকশনারী মেথড’ নামের একটি মেথড ব্যবহার করে থাকে যা ইংরেজী কীওয়ার্ডের প্রতিটি অক্ষর বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করে অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে সক্ষম। তাই, শক্তিশালী পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে অবশ্যই ছোট হাতের অক্ষর, বড় হাতের অক্ষর, গাণিতিক সংখ্যা এবং স্পেশাল ক্যারেকটার সমূহ (!@#$%^&*) ইত্যাদি ব্যবহার করুন।

• আপনি যদি আপনার পাসওয়ার্ড নিয়ে সন্তুষ্ট না থাকেন তবে www.passwordmeter.com এর মত বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার পাসওয়ার্ডের কাঠিন্যতা পরীক্ষা করতে পারেন।

• চেষ্টা করুন আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টটির পাসওয়ার্ড দু-তিন মাস অন্তর অন্তর পরিবর্তন করতে। এ পদ্ধতিতে কেউ যদি আপনার পাসওয়ার্ড জেনেই যায় তবে দু-তিন মাস পর আবার তাকে নতুন করে জানার প্রচেষ্টায় মাঠে নামতে হবে।

• ইন্টারনেটে সব স্থানে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। আপনি যদি গুগল, টুইটার এবং ফেসবুকের জন্য একই পাসওয়ার্ড নির্ধারন করে থাকেন তবে একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া মানেই হচ্ছে অনান্য গুলো হ্যাক হওয়া শুধু সময়ের ব্যপার। তাই, বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন রকম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

৪। থার্ড পার্টি অ্যাপঃ নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে ফেসবুকে বিভিন্ন রকমের অ্যাপের ছড়াছড়ি রয়েছে। কোন অ্যাপ আপনার দশটি ভালো বন্ধুর নাম প্রকাশে সাহায্য করে আবার কোন অ্যাপ আপনি কীভাবে মারা যাবেন সেটাই দেখায়!! যাই হোক, সবই যে এরকম অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ তা বলছিনা আমি, কিছু প্রয়োজনীয় অ্যাপও মাঝে মাঝে পাওয়া যায় তবে তার সংখ্যা খুবই কম বলতে গেলে। যাই হোক, যে কোন প্রকার অ্যাপ ব্যবহারের দেখবেন আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত প্রয়োগ করতে হচ্ছে যার মধ্যে একটি হচ্ছে আপনার অবর্তমানে আপনার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যে কোন কিছু পোস্ট করা, আপনার মেসেজ বক্স এবং ফ্রেন্ডলিস্টে এক্সেস করা ইত্যাদি যা অনেক ক্ষেত্রেই নিরাপদ। তাই, এই সব থার্ড পার্টি অ্যাপলিকেশনের ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই কোনটা ভালো,কোনটা মন্দ, কোনটার রেপুটেশন ফেসবুকে বেশি ইত্যাদি দিক বিবেচনা করা উচিৎ এবং একটি নিরাপদ অ্যাকাউন্টের জন্য শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলোই ব্যবহার করা উচিৎ।

৫। প্রাইভেসি সেটিংসঃ এই ধাপটিই মূলত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তায় সবচাইতে বেশি ভূমিকা রেখে থাকে। চলুন, প্রয়োজনীয় কিছু নিরাপত্তা লেয়ার সম্পর্কে জেনে নেই।

• আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার পর Settings এ ক্লিক করে Security পেইজে প্রবেশ করুন। পেইজটির উপরে দেখবেন লেখা রয়েছে, ‘Secure Browsing’ এবং এর পাশে দেখবেন একটি অপশন রয়েছে ‘Browse Facebook on a secure connection (https) when possible.’, টিক চিহ্ন দিন এবং পরিবর্তন সংরক্ষন করুন। এতে করে আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।

• আবারোও Settings > Security -এ যান। Security Browsing এর নিচের দিকে একটি লেখা ‘Login Notifications’ দেখতে পাবেন। এটি এডিট করুন এবং সম্ভব হলে ‘Email’ এবং ‘Text Message/Push notification’ দুটিতেই টিক চিহ্ন দিয়ে পরিবর্তন সংরক্ষন করুন। আপনি যদি এই অপশনটি চালু রাখেন তবে আপনি যদি অন্য কারও কম্পিউটার দিয়ে আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে থাকেন তবে আপনার ই-মেইলে বা ফোনে একটি বার্তা পাবেন। যদি আপনি নিজেই ঢুকে থাকেন তবে তো আপনি জানবেনই, আর যদি আপনি অন্য কারও কম্পিউটার থাকে না ঢুকলেও এরকম বার্তা পেয়ে থাকেন তবে আপনি বুঝতেই পারবেন যে কেউ একজন আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করেছিল। এই পদ্ধতি আপনার অনুসন্ধান সহজ করার জন্য যে ব্রাউজার থেকে লগইন করা হয়েছিল আপনার অ্যাকাউন্টে সেই ব্রাউজারের নাম, উক্ত অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রবেশের সময়ও আপনাকে জানাবে।

• Settings > Security পেইজের তৃতীয় অপশনটিও গুরুত্বপূর্ন। এই তৃতীয় নম্বর নিরাপত্তা লেয়ারটি বা ‘Login approvals’ এর মাধ্যমে আপনি একটি নিরাপত্তা কোড পাবেন আপনার মোবাইলে। প্রতিবার আপনি যখন নতুন ব্রাউজার থেকে আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকতে যাবেন তখন ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পরেও ঐ কোডটি আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। তাই, এই নিরাপত্তা লেয়ারটি ব্যবহারের ফলে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জানলেও সেই কোডটি না জানার জন্য আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবেনা। এছাড়াও, অচেনা ব্রাউজার থেকে লগইন করার সময় আপনাকে ফেসবুক থেকে একটি করে বার্তা পাঠানো হবে আপনার মোবাইল নম্বরে।

• Security পেইজে আরও একটি চমৎকার সিকিউরিটি লেয়ার রয়েছে যার নাম ‘Trusted Contacts’। এই সুবিধাটি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা তিনজন ফ্রেন্ডকে ট্রাস্টেড কন্টাক্ট লিস্টে রাখতে পারবেন এবং আপনার অ্যাকাউন্ট কোন ভাবে হ্যাক হয়ে গেলে আপনি নির্ধারিত সেই তিন জন বন্ধুর সাহায্যে আপনার অ্যাকাউন্টটি উদ্ধার করতে পারবেন।

৬। ফেসবুকের ডাটার কপি ডাউনলোডঃ আপনি যদি বেশ কয়েক বছর ধরে ফেসবুক ব্যবহার করতে থাকেন এবং অনেক গুরুত্বপূর্ন ডাটা যদি ফেসবুকে জমা হয়ে থাকে তবে আপনি আপনার ফেসবুক ডাটার একটি কপি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এতে করে হ্যাকার যদি আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে আপনার অ্যাকাউন্টটি মুছেও দেয় তবুও আপনার ডাটা গুলো থাকবে সুরক্ষিত। আপনি Settings থেকে General পেইজের একদম নিচে এই ‘Download a copy of your Facebook data’ অপশনটি পাবেন। মনে রাখবেন, অন্তত তিন মাস পর পর একবার করে এই ডাটা ডাউনলোড করে রাখা উচিৎ।

উপরের পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে সহজেই আপনি আপনার ফেসবুক প্রোফাইলটি হ্যাকারদের কবল থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেন। তাই এখনো যদি উপরোক্ত সিকিউরিটি লেয়ার গুলো আপনি অ্যাকটিভ করে না থাকেন তবে চটজলদি করে ফেলুন।
মিডিয়ার তথ্য প্রযুক্তি সহায়ক- মিডিয়া আইটি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ