News Bangla 24 BD | বাউল সম্রাট মহামতি ফকির লালন শাহের ১২৬তম তিরোধান
News Head

বাউল সম্রাট মহামতি ফকির লালন শাহের ১২৬তম তিরোধান


কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার এক জঙ্গলাকীর্ণ স্থানে সাধক ফকির লালন শাহ তার অনুসারী-ভক্তদের নিয়ে যে আখড়া গড়ে তুলেছিলেন তা এখন সারাবিশ্বের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। ফকির লালন শাহ তার গানের বাণীর ভিতর দিয়ে জীবন বিধানের নির্দেশনা দিয়েছেন। তার গান এক গভীর দ্যোতনায় এই বিশ্বসংসার, মানবধর্ম, সৃষ্টিকর্তা, ইহলৌকিক ও পারলৌকিকতা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিতে দেখতে বাধ্য করে।

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় গতকাল রবিবার শুরু হয়েছে বাউল সম্রাট মহামতি ফকির লালন শাহের ১২৬তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিনদিনব্যাপী স্মরণোত্সব। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া লালন আখড়াবাড়ি এখন কানায় কানায় পূর্ণ সাধু-ভক্তদের সমাগমে।

ফকির লালন স্রষ্টায় পূর্ণ সমর্পিত সাধক পুরুষ। শিষ্যরা তার নামের সাথে যুক্ত করেন ‘সাঁই’, ‘ফকির’, ‘ওলি’, ‘কামেল’ প্রভৃতি। তার রচিত গানগুলোর শ্রেষ্ঠত্ব বিচারে তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ বাউল অথবা বাউল সম্রাট হিসেবে আখ্যায়িত। গতকাল রাতে তিনদিনের উত্সব উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক জহির রায়হান। মুখ্য আলোচক ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, জেলা আওয়ামী লীগের সদর উদ্দিন খান ও আজগর আলী। আলোচনায় অংশ নেন লালন মাজারের প্রধান খাদেম মহম্মদ আলী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহেলা আক্তার। গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় লালনগীতির আসর।

ছেঁউড়িয়া আখড়াবাড়ির চারপাশ এখন সফেদ সাধকদের আনাগোনা। তিন দিনের উত্সব উপলক্ষে সফেদ লুঙ্গি, পাঞ্জাবি আর শাড়ি পরিহিত হাজারো ভক্তের সমাগমে মুখর। আখড়াবাড়ির মূল আঙিনা ও কালীগঙ্গা নদীর তীরে ভবের হাটে বসে ভজন-সাধনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বাউল-ভক্ত-সাধুরা। হাতে একতারা, দোতারা, খঞ্জনি, তবলা আর হারমোনিয়াম নিয়ে গলা ছেড়ে গাইছেন- পারে লয়ে যাও আমায়, দিন দুনিয়ার অচিন মানুষ আছে একজনা, তিন পাগলের হলো মেলা নদেয় এসে, তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের দেশে, অনায়াসে দেখতে পাবি কোন ঘরে সাঁইর বারামখানা, আছে যার মনের মানুষ মনে তোলা, আমার ঘরের চাবি পরের হাতে- প্রভৃতি মরমী গান।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ