মানুষ বড়জোর কত ঘণ্টা ঘুমাতে পারে? ১২, ১৪, ১৮ কিংবা ড্রাগ নিলে ৪০-৫০ ঘণ্টা? তবে যুক্তরাজ্যের চেশায়ারের স্টকপোর্টের এক কিশোরী বেথ গোডিয়ার ঘুমিয়েছেন একটানা ছয় মাস। এরমধ্যে খাওয়া-দাওয়া, হাঁটাচলা সবই করেছেন, কিন্তু তাও ঘুমের মধ্যে। আঁধো ঘুমে থেকে। পাঁচ বছর আগে নভেম্বরে ১৭তম জন্মদিনে বেথ এই ঘুমরাজ্যে ডুব দেয়। এরপর টানা ছয় মাস।
ডাক্তারি ভাষায় এর নাম ‘স্লিপিং ডিসঅর্ডার’। ব্রিটেনের ১০০ জন তরুণ ‘কেলিনি লেভিন সিনড্রোম- কেএলএস’ রোগে ভুগছেন। এটি পরিচিত ‘স্লিপিং বিউটি সিনড্রোম’ নামে। চিকিৎসা বিদ্যার এই রহস্য উদঘাটনে এখনও গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এদের বয়স ১৩-১৬ বছর, যা তরুণদের পড়লেখা ও ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেয়।
কেএলএস বিশেষজ্ঞ ডক্টর জোই লেসেইজনার বলেন,‘এক শতাব্দী আগে এই রোগ আবিস্কৃত হয়েছে। অস্বাভাবিক ঘুম তাদের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করে দেয়। তারা অলস হয়ে পড়ে। ঘুমের ঘোরে তারা স্বপ্ন দেখে তারা পৃথিবী থেকে অনেক দূরে। ঘুম থেকে ওঠার পর তারা বুঝতে পারে তারা কিছু হারিয়ে ফেলেছে। তখন তারা উদ্বিগ্নতা ও বিষন্নতায় ভোগে। আশপাশের সবকিছু অপরিচিত মনে হয়। বর্তমানে বেথ শিশু বিশেষজ্ঞের অধীনে চিকিৎসাধীন আছে।
গত পাঁচ বছরে বেথের মা জেনি দেখেছেন তার মেয়ে ৭৫ ভাগ সময়ই ঘুমিয়ে কাটায়। বর্তমানে বেথ এক থেকে দুই মাস ঘুমায়। তার জীবন বিছানায় ও সোফায় কেটে যায়। খুব কম সময়ই বেথ ঘর থেকে বের হয়। এমনকি দুর্বলতার কারণে হাটতে না পারায় চিকিৎসক তাকে হুইলচেয়ার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। তার মা সব সময় মেয়ের সঙ্গেই থাকার চেষ্টা করেন। কখন মেয়ে ঘুম থেকে কিছুটা জেগে উঠবে! মেয়ের জন্য চাকরিও ছেড়েছেন তিনি। জেনি বলেন,‘বেথ যখন ঘুম থেকে ওঠে সে জানে না সে কোথায় আছে ও ভীষণ উত্তেজিত থাকে।’
সূত্র: ডেইলি মেইল