৮ নারী দিয়ে পুলিশের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমান সংখ্যা ১১ হাজার
১৯৭৪ সালে ৮ জন ভর্তির মধ্য দিয়ে পুলিশ বাহিনীতে নারী পুলিশের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে নারী পুলিশের সংখ্যা ১১ হাজার ১৩২ জন। ৩ জন নারী জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন ১ হাজার ১৮ জন। এছাড়াও দেশের প্রথম এবং একমাত্র নারী অতিরিক্ত আইজিপি ফাইন্যান্স এন্ড ডেভলপমেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা যায়, দেশে পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ১ লাখ ৯৫ হাজার। এর মধ্যে নারী পুলিশ রয়েছে ১১ হাজার ৩২ জন। অতিরিক্ত আইজিপি ১ জন, ডিআইজি ২ জন, এডিশনাল ডিআইজি ২ জন, পুলিশ সুপার ২৯ জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৮৬ জন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ১ জন, সহকারী পুলিশ সুপার ১০১ জন, ইন্সপেক্টর ৯২ জন, এসআই ৫১৩ জন, সার্জেন্ট ৩০ জন এএসআই ৭৮৪ জন ও কনস্টেবল ৮২৪৪ জন কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে জেলা পুলিশ সুপার পদে রাজবাড়িতে সালমা, নরসিংদীতে আমিনা ও চাঁদপুরে দায়িত্ব পালন করছেন।
২ জন ডিআইজির মধ্যে রওশন আরা সিআইডিতে এবং মিলি বিশ্বাস পুলিশ সদর দফতরে দায়িত্ব পালন করছেন। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি মিলি বিশ্বাস বলেন, পুলিশ বাহিনীতে পুরুষ নারী কোনো ভেদাভেদ আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ নারী সদস্যরা অস্ত্র উদ্ধার করছে, ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী গ্রেফতার করাসহ চ্যালেজিং সব কর্মকা-ে সমান দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু পুলিশে কেন নারীরা সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। দেশ পরিচালনা থেকে শুরু করে সর্বত্র নারীরা নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নারী উন্নয়ন, ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষা প্রসারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। জানা গেছে পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত নারী সদস্যদেরকে প্রথম জাতিসংঘ মিশনে পাঠানো হয় ২০১০ সালে। ১৬৪ জনের একটি কন্টিনজেন্ট নামিবিয়ায় সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে। এরপর থেকে জাতিসংঘ মিশনের বাংলাদেশের নারী পুলিশের চাহিদা বাড়তে থাকে। বর্তমানে ১০১৮ জন নারী পুলিশ সদস্য জাতিসংঘের হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা দায়িত্বে নিয়োজিত আছে।
এছাড়া ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নারী পুলিশের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওসি হিসেবে একজন নারীকে পোস্টিং দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে প্রথম এবং একমাত্র নারী অতিরিক্ত আইজিপি ফাতেমা বেগম সততা নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী ১৩ এপ্রিল কর্মজীবন শেষ করে তার অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৩০ টি বছর কাটালাম। মনেই হচ্ছে না ৩০ বছর। মনে হয় এইতো পুলিশে যোগদিলাম। এত আন্তরিকতা পেয়েছি সহকর্মীদের-এত সহযোগিতা। নিজেকে কখনো নারী হিসেব ভাবার সুযোগই পাইনি। যেসব কাজ সামনে এসেছে-করেছি। অনেক স্মৃতি বিজরিত আমার এই পুলিশ বাহিনী। নতুন প্রজন্মে উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পুলিশে অন্য যেকোনো পেশার তুলনায় নিজেকে মেলে ধরার নিজের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ আছে। এখানে কাজ না করলে সেটা উপলব্ধি করা যাবে না।