News Bangla 24 BD | মাগফিরাতের ১০ দিন
News Head

মাহে রমজানের ১১তম তথা মাগফিরাতের প্রথম দিবস আজ। দেখতে দেখতে আমাদের কাছ থেকে চলে গেলো রহমতের প্রথম দশ দিন। মহানবী (সা.) রমজানের প্রথম ভাগ (১-১০ দিন) রহমতের, মধ্যভাগ (১১-২০) মাগফিরাতের এবং (২১-৩০) নাজাতের বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এটি এমন একটি মাস, যার প্রথম ভাগে আল্লাহর রহমত, মধ্যভাগে গুনাহের মাগফিরাত এবং শেষ ভাগে দোজখের আগুন থেকে মুক্তিলাভ রয়েছে।’ (মিশকাত)। এতে প্রমাণিত হয়, রমজানের রোজা হলো গুনাহ মাফ এবং মাগফিরাত লাভের মধ্য দিয়ে চিরশান্তি, চিরমুক্তির একটি সুনিশ্চিত ব্যবস্থা, অতি নির্ভরযোগ্য সুযোগ। কিন্তু যে এ সুযোগের সদ্ব্যবহার না করে তার ধ্বংস অনিবার্য, তার বিপদ অবশ্যম্ভাবী। কেননা, ইমাম বুখারি রচিত আল মুফরাদ গ্রন্থে রয়েছে, হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, জিবরাইল (আ.) এসে নবীজিকে (সা.) বললেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যে রমজান মাস পাওয়ার পরও নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে পারল না। তখন নবীজি (সা.) বললেন, আমিন। সম্মানিত পাঠক! আমাদের মনে রাখা দরকার, যেখানে রাসূলে মকবুল (সা.) দোয়া করেছেন তা কখনও বিফলে যায় না। তাই আমাদের মাগফিরাতের এ দশকে সতর্ক হওয়া জরুরি। বিদায় নিয়েছে রহমতের প্রথম দশক। এক্ষণে আমাদের ভেবে দেখা দরকার, আত্মশুদ্ধি অর্জনে আমরা নিজেদের কতটুকু পরিপূর্ণ করতে পেরেছি।

আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মনের কথা তোমাদের রব জ্ঞাত, সৎকর্মী হলে তিনি তওবাকারীদের দোষ ক্ষমাকারী।’ (বনি ইসরাইল, আয়াত-২৫)। আমরা কোরআনের আয়াত পড়লেও মনে ভয় আসে না। দুনিয়াপ্রীতি, প্রতিযোগিতা, মোহ, লোভ-লালসা থেকে মুক্ত হতে পারি না। এগুলো হয় কোরআন বুঝে না পড়ার কারণে। যেসব গোপন পাপ আমরা করি, যার কোনো সাক্ষী নেই, এসব পাপের জন্য আমরা কোনো অনুতাপ বা অনুশোচনা করি না, এমনকি বুঝিও না যে এটা পাপ। আমরা এতই মোহাচ্ছন্ন যে পাপ-পুণ্যের হিসাব করতে ভুলে গেছি। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবি (সা.) বলেছেন, এমন চারটি চরিত্র দোষ_ আমানতের খেয়ানত করা, কথায় কথায় মিথ্যা বলা, অঙ্গীকার ভঙ্গ করা ও কারও সঙ্গে মতানৈক্য বা বিরোধ হলে তাকে গালাগাল করা। কোনো ব্যক্তির মধ্যে এসব পাওয়া গেলে সে পুরোপুরি মোনাফেক ও তার কোনো একটি পাওয়া গেলেও তার মধ্যে মোনাফেকের স্বভাব আছে বলা যাবে। (বোখারি শরিফ, প্রথম খণ্ড, হাদিস নম্বর-৩০)।

আমরা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব, আমাদের মধ্যে এ দোষগুলোর কোনো একটি নেই; বরং পরিস্থিতির আলোকে মনে হয় এগুলো কোনো পাপই নয়, কেহ দেখে না, লোকচক্ষুর অন্তরালে করা যায় ইত্যাদি। আসুন লোক দেখানো আমল পরিহার করে আত্মশুদ্ধি করি। কেননা, আত্মশুদ্ধি সংযমের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। মাগফিরাতের এ দশকে আমাদের উচিত, বেশি বেশি তওবা ইস্তিগফার করা, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। আত্মশুদ্ধির জন্য কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী চলার পথে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া সম্ভব। আল্লাহ পাক আমাদের রমজানের মধ্যভাগে গুনাহের মাগফিরাত লাভ করার তওফিক দান করুন, আমিন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ