News Bangla 24 BD | হুমায়ূন আহমেদের পঞ্চম মৃত্যু বার্ষিকীতে নূহাশ পল্লীতে নানা আয়োজন
News Head

হুমায়ূন আহমেদের পঞ্চম মৃত্যু বার্ষিকীতে নূহাশ পল্লীতে নানা আয়োজন


স্টাফ রিপোর্টার : জনপ্রিয় কথা সাহিত্যক হুমায়ুন আহমেদের পঞ্চম মৃত্যু বার্ষিকী নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গাজীপুরস্থ নুহাশ পল্লীতে প্রয়াত লেখকের কবর জিয়ারত, কোরান খানী, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ছাড়াও দুপুরে এতিমের ভোজনসহ নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের লক্ষে প্রয়াত হুমায়ুন আহমেদের সহধর্মীনী মেহের আফরোজ শাওন তার দুই পুত্র সন্তান নিষাদ ও নিনিদকে সাথে নিয়ে নুহাশ পল্লীতে আসেন বুধবার সকালে। সকাল থেকে একে একে হুমায়ুন আহমেদের প্রিয় স্থান নুহাশ পল্লীতে ভক্তদের ভীড় বাড়তে থাকে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রিয় লেখককে স্মরণ করতে আসেন অনেক ভক্ত। দিবসটি পালনের লক্ষ্যে নুহাশ পল্লী সর্ব সাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। এবার নুহাশপল্লীর বৃষ্টি বিলাসের সামনেই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীর আমন্ত্রণে অতিথিদের জন্য প্যান্ডেল নির্মণ করা হয়েছে। এতিম শিশু ছাড়াও হিমু পরিবারের ৯০ জন হিমু, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অতিথি, এলাকার লোকজন ও হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের লোকজন ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা গাজীপুরের পিরুজ আলী নুহাশ পল্লী এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার থেকেই ভীড় করতে শুরু করেন জানিয়েছেন নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল। পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে বইপড়া ও সাহিত্য আলোচনার পাশাপাশি দোয়া মাহফিলের মতো নানা আয়োজনে হিমু ও মিছির আলীসহ জনপ্রিয় অনেক চরিত্রের ¯্রষ্টা প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করেছে তার ভক্ত ও পরিবারের সদস্যরা।
মেহের আফরোজ শাওন বুধবার সকালে নূহাশ পল্লীতে চিরনিদ্রায় শায়িত এ লেখকের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সৃতি রক্ষার্থে সেখানে ‘হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলে জানান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আশা করছি, আগামী ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে ওই জাদুঘরের একটা অংশ উদ্বোধন করা হবে। ক্লোন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময়ে বাংলাদেশে একটি উন্নত মানের ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। সেই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠান দেশের নীতিনির্ধারকদের উদ্যোগ ও সহযোগিতার আহ্বান জানান শাওন। তিনি বলেন, আমি আমার পক্ষ থেকে জীবন দিয়ে যতটুকু করবার সেটা আমি করব। কিন্তু আমি একা, আমার আহ্বানে একটি ক্যান্সার হসপিটাল করা সম্ভব নয়। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের একটা আহ্বানে সেটা সম্ভব ছিল।“এক হুমায়ূন আহমেদের ডাকে বাংলাদেশে তার সমস্ত ভক্ত-পাঠক, তার দর্শকরা যেভাবে একত্রিত হত, আমার ডাকে সেটা হবে না। আমিতো আছিই, আমি সব সময় থাকব। ক্যান্সার হসপিটালের এ উদ্যোগটা গোষ্ঠীবদ্ধভাবে নিতে হবে।”এসময় অন্যদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ-শাওন পুত্র নিষাদ হুমাযুন ও নিনিত হুমায়ুন, শাওনের মা তহুরা আলী, বাবা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, হুমায়ুন আহমেদের বোন সুফিয়া হায়দার ও রোকসানা আহমেদসহ অসংখ্য ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বেলা পৌনে ১২টার দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে হুমায়ুন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
অসম্ভব জনপ্রিয়তা ও পাঠকপ্রিয়তা পেলেও দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই অকালে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি হয় শূন্যতার। শূন্যতা সৃষ্টি হয় তার প্রিয় প্রাঙ্গন নুহাশপল্লীতেও। যে শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। আর তাই নুহাশপল্লীর প্রতিটি গাছপালা ও পাখপাখালির এবং নানা ভাস্কর্যের ভিড়ে অকাল প্রয়াত এ লেখককে মনে পড়ে এখানে আসা দর্শনার্থীদের।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ