ডিজিটাল যুগে আপনার কোনও তথ্যই গোপন নেই
আপনার অনলাইন তথ্য কতটা সুরক্ষিত? প্রতিদিন বেড়ে চলা সাইবার ক্রাইমের ঘটনায় প্রশ্নটা মনে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে নিশ্চয়ই।
সাইবার হানা ঠেকানোর জন্য নানা রকম উপায়ও বের হচ্ছে। কিন্তু হ্যাকাররা ঠিক বিকল্প পথ খুঁজে বের করে নিচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে। রূপ বদলে হামলা চালাচ্ছে।
গত মে মাসেই যে ভাবে ওয়ানাক্রাই র্যানসমওয়্যার এবং তার পর পরই পেটিয়া ভাইরাস হামলা চালিয়েছিল বিশ্বের শতাধিক দেশে, এরপর আপনার দেওয়া অনলাইন তথ্য কতটা সুরক্ষিত প্রশ্ন থেকেই যায়।
যেমন, ভারতে আধার কার্ডের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া নিয়ে নানা রকম তথ্য উঠে আসছিল। তীব্র প্রতিবাদও হয়েছিল। ২০১৩ সালে আমেরিকা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল সাইবার ক্রাইমের কবলে পড়ে। একটি সংস্থার প্রায় ৭ কোটি ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে গিয়েছিল পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) সিস্টেমের মাধ্যমে।
২০১৬ সালে সাইবার হামলার কবলে পড়ে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যাংক। রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ১০ লক্ষ ডলার ফিলিপিন্স, শ্রীলঙ্কা-সহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়ে যায়।
সাইবার ক্রাইম বহু দিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হয়ে আসছে। কিন্তু সাইবার ক্রাইমের ‘গ্লোবালাইজেশন’ এ সারা বিশ্ব আতঙ্কিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাইবার ক্রাইম আটকানোর পদ্ধতিতেই গলদ থেকে যাচ্ছে। সাইবার হামলা ঠেকাতে সাধারণত অ্যান্টি-ভাইরাস প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর উপরই দেশগুলোকে নির্ভর করতে হয়।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংস্থাগুলোয় তৈরি অ্যান্টি-ভাইরাসগুলো ‘গেটকিপার’ হিসেবেই কাজ করে। ফলে হ্যাকারদের মনে ভয় ধরাতে পারে না এরা। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, অ্যান্টি-ভাইরাস প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর দক্ষতার উপরও।
মোবাইলে কোনও অ্যাপ ইনস্টলেশনের জন্য কিছু শর্ত থাকে। যেগুলো আমরা অধিকাংশই না পড়ে ‘ওকে’ করে দিই। অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইনস্টল হল ঠিকই, কিন্তু তার সঙ্গে আপনার সিস্টেমের সমস্ত তথ্য ফাঁস হয়ে যাচ্ছে না তো?
যতই সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে বড়াই করা হোক না কেন, এটা আসলে একটা প্রতিশ্রুতি মাত্র। ডিজিটাল যুগে কোনও কিছুই আর গোপন নয়। বলা ভাল, ওপেন সিক্রেট। এমনটা বলছেন বিশেষজ্ঞরাও।