News Bangla 24 BD | টঙ্গীতে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব কাল শুরু
News Head

টঙ্গীতে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব কাল শুরু


টঙ্গী : সোনাবানের শহর খ্যাত শিল্পাঞ্চল অদ্যুষিত টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে আগামীকাল ১২ জানুয়ারী ২০১৮ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
এবারের প্রথম দফার বিশ্ব ইজতেমায় ৩২ জেলার মুসল্লিরা এবং দ্বিতীয় দফায় ২৯ টি খিত্তায় ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ও ব্যবসায়ীসহ কলকারখানার শ্রমিক-মালিক এবং বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ আল্লাহ্র বিশেষ রহমত হাসিলের আশায় বিশ্ব ইজতেমা মাঠে কাজ করেছেন। ইজতেমাকে সামনে রেখে লাখো মুসল্লির পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে তুরাগ নদের পূর্ব তীর। এরই মধ্যে প্রচন্ড শীতকে উপেক্ষা করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে তাবলিগ জামাত অনুসারি মুসল্লিরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে ইজতেমা ময়দানে জড়ো হচ্ছেন। তবে প্রতিবারের চেয়ে এবার ময়দানে মুসল্লিদের উপস্থিতি কম হচ্ছে। এর পেছনে ইজতেমা সুরা কমিটির আমীর দিল্লির মাওলানা সাদ এর উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন নাটকীয়তাকে দায়ী করেছেন আয়োজক কমিটি। শিল্পনগরী টঙ্গী যেন প্রতি বছরের মতো এবারও ফিরে পেয়েছে নতুন প্রাণ। ১২ জানুয়ারি ইজতেমা শুরু হলেও বিভিন্ন নাটকীয়তার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মাওলানা সাদ ইজতেমায় আসছেন এ সংবাদ প্রকাশের পর ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন। গতকাল বুধবার মাওলানা সাদ ঢাকার আর্ন্তজাতিক শাহজালাল বিমান বন্দরে এসে পৌঁছেছেন এ খবরের ভিত্তিতে তার বিরোধীরা হাজার হাজার মুসল্লি জড়ো হয়ে বিমান বন্দর এলাকায় বিক্ষোভসহ বিমান বন্দর থেকে বের হওয়া বিভিন্ন যানবাহনসহ এ্যাম্বুলেন্স তল্লাশি করে বন্দর এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। পরে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হাজার হাজার মুসল্লি বন্দর এলাকা ত্যাগ করেন।
এদিকে আগামীকাল ১২জানুয়ারী শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্যদিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে ১৪ জানুয়ারি দুপুরে অর্থাৎ জোহরের নামাজের পূর্বে যে কোনো এক সময় আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহা-সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। এরই মধ্যে ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদের উপর ৭টি ভাসমান পন্টুন সেতু নিমার্ণ করেছেন। ১৬০ একর জমির ওপর নির্মিত সুবিশাল প্যান্ডেলের কাজ, খুঁটিতে নম্বর প্লেট, খিত্তা নম্বর, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, তাশকিল কামরা, মহিলাদের জন্য মাস্তুরাত কামরা, হালকা নম্বর বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। আগত মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে বয়ান শোনার জন্য পুরো মাঠে শব্দ প্রতিধ্বনিরোধক প্রায় ১৮০শ’ টি বিশেষ ছাতা মাইকসহ ৩৮০টি মাইক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও আর্ন্তজাতিক নিবাসে মেহমানদের রান্না-বান্নাসহ আভ্যন্তরিন মুসল্লিদের জন্য আশপাশের এলাকায় স্থাপিত বিভিন্ন হোটেল রেস্তোয়ায় বিশেষ নজর রাখার জন্য বলা হয়েছে। যাতে তাদের ফুড পয়জনিং না হয়।
বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মুসল্লিদের কহর দরিয়া তুরাগ নদের পারাপারের জন্য নদীর ৭ টি স্থানে ভাসমান সেতু (পল্টুন) স্থাপন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনীয়ার ব্রিগেড ওই ব্রীজ স্থাপনের কাজ করেছেন। এছাড়া এর পাশাপাশী দেশী-বিদেশী মুসল্লীদের স্বাগত জানানোর জন্য ১০টি তোরণ নির্মাণ করবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লীদের ওজু, গোসল, পয়ঃনিষ্কাশন ও সুপেয় পানি সরবরাহের জন্যে ইজতেমা ময়দানে ১২টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে প্রতিদিন ঘন্টায় ৩ কোটি ৫৫ লাখ গ্যালন সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। ওজু-গোসলের হাউজ ও টয়লেটসহ প্রয়োজনী স্থানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও নতুন ৩ টিসহ বহুতলীয় পাকা দালানে প্রায় ৪ হাজার ও ১৫৪ টি অস্থায়ী টয়লেট ইউনিট রয়েছে। এদের মধ্যে নষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্থ অজু গোসলখানা এবং টয়লেটগুলো ইতোমধ্যে সংস্কার করা হয়েছে। ময়দানের চাহিদা মোতাবেক ১০০ ড্রাম বি¬চিং পাউডার সরবরাহ করা হয়েছে। ২৪ টি ফগার মেশিনে মশক নিধনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ৫৬ টি চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।
ইজতেমা চলাকালে প্রতিদিন ২৫টি গার্বেজ ট্রাকের মাধ্যমে দিন-রাত বর্জ্য অপরাসণ কার্যক্রম চালানো হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা-চৌরাস্তা পর্যন্ত মহাসড়কের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, রাস্তার উপর পার্কিং করা গাড়ি সরানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সিনেমা হলগুলো বন্ধ এবং ইতিমধ্যে রাস্তার দুই পাশে দেয়ালের অশ্লীল পোষ্টার অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইজতেমা মাঠের চারপাশের রাস্তার ধূলাবালি নিয়ন্ত্রনে পানি ছিটানোর জন্য গাসিক এর পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রসাশন। বিভিন্ন সেক্টরে বিভক্ত হয়ে পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশসহ এবার পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী কাজ করবে। পুলিশ ও র‌্যাবের অর্ধশত সিসি ক্যামেরা মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা মনিটরিং করা হবে। এছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, কন্ট্রোল রুমও স্থাপন করা হচ্ছে। ইজতেমা মাঠের বিভিন্ন স্থানে র‌্যাব ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া ইজতেমা ময়দানের চার পাশের সকল অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। যে গুলো বাকি রয়েছে সেগুলো উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার টঙ্গীর বিভিন্ন বস্তিগুলোতে মাদক, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধীদের নিয়ন্ত্রনে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
অন্যদিকে ইজতেমাকে কেন্দ্র করে জিসিসি কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতৃবৃন্দ মিলে ইজতেমা ময়দানের উত্তরে নিউ মন্নু টেক্স্রটাইল মিলস প্রাঙ্গন, নিউ অলিম্পিয়া, হোন্ডা রোড, আই আর আই রোড এলাকায় অস্থায়ী ভাবে বাজার বসিয়ে ভিট প্রতি ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা ভিট প্রতি নগদ এবং ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা প্রতিদিন ভাড়ায় বিভিন্ন পন্য-সামগ্রীর দোকানপাট এবং আলাদা ভাবে বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবসা বসাতে বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ইজতেমায় প্রথম দফায় যে সকল জেলার আগমন : বিশ্ব ইজতেমায় দেশের ঢাকা, নড়াইল, মাদারীপুর, ভোলা, মাগুরা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, ঝিনাইদহ, জামালপুর, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, নরসিংদী, পিরোজপুর, কুমিল্লা, কুড়িগ্রাম, ফেনী, শেরপুর, নারায়ণগঞ্জ, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, লক্ষীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা এবং রাজশাহীসহ ৩২ জেলার মুসল্লিরাসহ বিদেশী প্রায় ২৫ হাজার মুসল্লি প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহন করবেন বলে জানা গেছে।
ইজতেমা ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লিদের স্থান ( খিত্তা) নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রথম পর্বের জন্য পুরো ময়দানকে ২৭ টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দফায় ৩২ জেলার মুসল্লিরা এবং দ্বিতীয় দফায় ২৯ টি খিত্তায় ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন।
আইনশৃংখলা জোরদার : বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গীতে আইনশৃংখলা জোরদার করা হয়েছে। পাঁচ সেক্টরে ভাগ করে পাঁচ স্তুরের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ইজতেমার ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত সাদা পোষাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশসহ র‌্যাব, সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। তবে গত বুধবার থেকেই ময়দানের প্রতিটি প্রবেশপথে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে র‌্যাবের কমিউনিকেশন উইং ও পুলিশের পক্ষ থেকে ১৮টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, বাইনোকুলার, নাইটভিশন গগল্স, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, হেলিকপ্টার-নৌ টহল, ও ৩টি স্টাইকিং ফোর্স। র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্সের সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ ইজতেমা মাঠে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটতে পারে সে ব্যাপারে কড়া নজরদারি রাখবেন। প্রতিটি খিত্তায় বিশেষ টুপি পরিহিত ও সাদা পোশাকধারী ৬ জন করে গোয়েন্দা সদস্য অবস্থান করবেন। তারা কোন প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতার ইঙ্গিত পেলে বিশেষ সিগনালের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তৎক্ষণিক অবহিত করবেন। এছাড়াও তারা ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে প্রত্যক্ষ করার জন্য ল্যাপটপ কম্পিউটারের স্ক্রিনে সার্বক্ষণিক নজর রাখবেন। ১৪ টি গাড়িসহ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সতর্কাবস্থায় রাখা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন স্থানে বসানো র‌্যাবের ৯টি ও পুলিশের ১৫টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষক দল সার্বক্ষণিক বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের পর্যবেক্ষণ করবেন।
বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের প্রতি পুলিশের আহ্বান : ১২ থেকে ১৪ এবং ১৯ থেকে ২১ জানুয়ারি দু’পর্বে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্তকর্তামূলক আহ্বান জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেক মুসল্লিকে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান করতে হবে। অপরিচিত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তি এবং কোনো পোঁটলা, ব্যাগ বা সন্দেহজনক বস্তুর উপস্থিতি দেখামাত্র তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবহিত করতে হবে। এজন্য র‌্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে মোবাইল ও টেলিফোন নম্বরসহ লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এছাড়া শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার ষ্টেডিয়াম ও নিউ মন্নু টেক্সটাইলস মিলস প্রাঙ্গনে র‌্যাব ও পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রশাসনিক আহবানে আরো জানানো হয়, প্রত্যেক মুসল্লি তাদের টাকা বা মূল্যবান সামগ্রীসহ একাকী যেন বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাফেরা না করা এবং সব সময় টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী নিজ হেফাজতে রাখার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও হকার ও ভ্রাম্যমান ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে খাদ্য বা পানীয় গ্রহণে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। স্থায়ী দোকানের খাবার মুসল্লিদেরকে বিপদমুক্ত রাখবে। টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী চুরি বা খোয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ বা র‌্যাবকে জানানোর আহ্বান করা জানানো হয়েছে।
ইজতেমার ৩ দিন ১৯ টি বিশেষ ট্রেন সার্ভিস : রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এবারের বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের সুষ্ঠু যাতায়াতের জন্য ৩ দিনব্যাপী প্রতিদিন ১৯টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আগামী ১২ জানুয়ারি বাদ জুমা ঢাকা-টঙ্গী, টঙ্গী-ঢাকা এবং ১৩ জানুয়ারি লাকসাম-টঙ্গী বিশেষ ট্রেন চলবে। ১৪ জানুয়ারি প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আপ। মোনাজাতে বিশেষ ৪ জোড়া এবং টঙ্গী-ময়মনসিংহ বিশেষ ২ জোড়া, ঢাকা-টঙ্গী ৪ জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। ১১ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখী সব ট্রেন ২মিনিট টঙ্গী ষ্টেশনের দাঁড়াবে। সাপ্তাহিক বন্ধে সকল ট্রেন ওই সময়ে চলাচল করবে। তবে এ লাইনে ১৪ জানুয়ারি ডেমু ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আসা মুসল্লিদের গাড়ি পার্কিং : বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক নির্ধারিতস্থানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মুসল্লিরা উত্তরা গাউছুল আজম এভিনিউ (১৩নং সেক্টর রোডের পূর্ব প্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত হয়ে গরীবে নেওয়াজ রোড), সোনারগাঁও জনপথ চৌরাস্তা হয়ে ডিয়াবাড়ি খালপাড় পর্যন্ত, উত্তরাস্থ ১২নং সেক্টর শাহ মখদুম এভিনিউ, উত্তরা ১৬ ও ১৭নং সেক্টরের খালি জায়গা, কামারপাড়া ট্রাকষ্ট্যান্ড ও ১০নং সেক্টরের খালি জায়গা, এছাড়াও প্রত্যাশা হাউজিং, ধউড় ব্রিজ ক্রসিং সংলগ্ন পার্কিং (আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের খালি জায়গা) এবং বিআইডব্লিউটিএ ল্যান্ডিং ষ্টেশন এবং উত্তরাস্থ শাহজালাল এভিনিউ, নিকুঞ্জ-১ এবং নিকুঞ্জ-২ এর আশপাশের খালি জায়গায় পার্কিং করতে বলা হয়েছে। এদিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা হয়ে আগত মুসল্লিদের বহনকারী যানবাহন পার্কিংয়ের জন্য মহাসড়ক পরিহার করে টঙ্গীর কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস কম্পাউন্ড, মেঘনা টেক্সটাইল মিলের পাশে রাস্তার উভয় পাশ, গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠ, জয়দেবপুর চৌরাস্তা তেলিপাড়ার ট্রাকষ্ট্যান্ড, চান্দনা চৌরাস্তা হাইস্কুল মাঠ এবং নরসিংদী-কালীগঞ্জ হয়ে আগত মুসল্লিদের বহনকারী যানবাহন টঙ্গীর রেলওয়ে ষ্টেশনের পূর্বপাশসহ কে-টু (নেভী) সিগারেট কারখানা সংলগ্ন পাশের খোলা স্থান ব্যবহার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা : বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বৃহত্তর জেলাগুলোর ঢাকাগামী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়াও দুই পর্বের আখেরি মোনাজাতের দিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আব্দুল্লাহপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত গাজীপুরের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। আগামী ১৪ ও ২১ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের দিন সকাল ৬টা থেকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ-টঙ্গী মহাসড়কের মাজুখান ব্রীজ থেকে টঙ্গী ষ্টেশন রোড ওভারব্রীজ পর্যন্ত সড়ক পথে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। টঙ্গীর কামারপাড়া ব্রীজ থেকে মন্নু টেক্সটাইল মিল গেট পর্যন্ত সড়ক পথেও একই নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।
মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম : ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রথম পর্বে ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পারভেজ হোসেন বলেন, গাজীপুর সিভিল সার্জন টঙ্গী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালকে ইজতেমার জন্য অস্থায়ীভাবে আরো ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, হৃদরোগ ইউনিট, বক্ষব্যাধি/ এ্যাজমা ইউনিট, ট্রমা (অর্থোপেডিক) ইউনিট, বার্ণ ইউনিট, স্যানিটেশন টিম এবং ১৪টি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়াও চক্ষু, মেডিসিন ও সার্জারিসহ বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞসহ চিকিৎসক রোস্টার অনুযায়ী চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকবেন।
ইজতেমায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা : টঙ্গী ডেসকো সূত্রে জানা যায়, ইজতেমার ময়দান ও আশপাশের এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ। উত্তরা, টঙ্গী সুপার গ্রিড ও টঙ্গী নিউ গ্রিডকে বরাবরের মতোই মোট ১৩২ কেভি সোর্স হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে, যাতে করে একটি গ্রিড অকেজো হলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘিœত না হয়। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ টি ১১ কেভি ফিডার লাইন ও ১৯ টি বিতরণ কেন্দ্র করা হয়েছে। হঠাৎ কোন কারনে ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে পড়লে সাথে সাথে যাতে বদল করা যায় তার জন্য স্ব-স্ব স্থানে ৪টি সাব স্টেশন ও ৫ টি ট্রলি ট্রান্সফরমার রাখা হবে। এছাড়া অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসাবে ৪ টি জেনারেটর সব সময় প্রস্তুত থাকবে।
পানি ও গ্যাস সরবরাহ : ইজতেমা আয়োজক তাবলিগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুতি ছাড়াও ওয়াসা, তিতাসসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোও তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। স্থানীয় ওয়াসা ও তিতাসগ্যাস কোম্পানী সূত্রে জানা যায়, ইজতেমা ময়দানে ১৩ টি গভীর নলকুপ স্থাপন করা হয়েছে। ১২কি.মি পাইপ লাইনের মাধ্যমে যা থেকে দৈনিক প্রতিঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি ৫ লক্ষ গ্যালন সুপেয় পানি মুসল্লি¬¬দের মধ্যে সরবরাহ করা হবে। এবারও স্থায়ী টয়লেট, গোসল ও ওজুখানা তৈরি ও মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তাদের গাড়ীর মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে পানি সরবরাহ করবে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইজতেমা ময়দানের বিদেশি মেহমানখানায় ও ইজতেমা আয়োজকদের রান্না বান্নার প্রয়োজনীয় স্থানে গ্যাস সংযোগের কাজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মুসল্লিদের যাতায়াতের রাস্তায় ধূলোবালি প্রতিরোধে প্রতিদিন পানি ছিটানো হবে।
বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসনের আহ্বান : কামারপাড়া হতে সূইচগেট পর্যন্ত তুরাগ নদের সীমানা পিলার থেকে ১৫০ ফুটের মধ্যে গড়ে তোলা সকল ধরনের স্থাপনা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন।
মিডিয়া সেন্টার : ঢাকা, গাজীপুর, টঙ্গীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের উত্তরপার্শ্বে নিউ মুন্নু ফাইন কটন মিলস মাঠে টঙ্গী থানা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে একটি অস্থায়ী মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এব্যাপারে টঙ্গী থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইঞ্জি.এম এম হেলাল উদ্দিন এবং সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ভূঁইয়া বলেন, স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সাংবাদিকদের জন্য মিডিয়া সেন্টারে বিদ্যুৎ ও কম্পিউটারসহ সব ধরণের ব্যবস্থা রয়েছে।
বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ বিতরণ : ইজতেমা মাঠের উত্তরপার্শে নিউ মন্নু ফাইন কটন মিলস মাঠে টঙ্গী থানা প্রেস ক্লাব কর্তৃপক্ষ প্রতিবারের ন্যায় এবারও ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১২ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়দানে আসা অসুস্থ মুসল্লিদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ বিতরণ করবে। এছাড়াও টঙ্গী ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ, ইবনে সিনা, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, র‌্যাব, জেলা প্রশাসন, পুলিশসহ ইমাম সমিতি ৪৫টি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তাদের স্টলে বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহ করবে। আজ (শুক্রবার) এসব স্টলগুলো উদ্বোধনকালে গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম.এ মান্নান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. আজমত উল।লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম আলম, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশিদসহ রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
ইজতেমা কমিটি ও প্রশাসনের বক্তব্য : বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতির কাজ প্রায় ৯৯ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রথম পর্বে অংশ গ্রহণকারী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ময়দানে স্ব-স্ব খিত্তায় এসে অবস্থান নিচ্ছেন। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলার মুসল্লিরা এবছর দুই দফায় ইজতেমায় অংশ নেবেন। প্রথম পর্বে ১৬ জেলা এবং দ্বিতীয় পর্বে ১৬ জেলার মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন। ইজতেমার আয়োজক তাবলীগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুতি ছাড়াও ডেসকো, তিতাস, ওয়াসাসহ সরকারের সংশ্লি¬ষ্ট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোও তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
টঙ্গী মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ ফিরোজ তালুকদার জানান, টঙ্গীর আইনশৃংখলা পরিস্থিতি বিশেষ করে চুরি, ছিনতাই রোধসহ মাদক ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ এবং এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশিদ জানান, টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় আইনশৃংলা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি প্রতিবারের ন্যায় এবারও শান্তিপূর্ণ ভাবে বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন হবে ইনশাল্লাহ।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম.এ মান্নান বলেন, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সমন্বয়ে ১২টি কমিটি গঠনের মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকা দুর্গন্ধ ও রোগজীবানুুমুক্ত রাখতে ১শ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। মশা মাছি তাড়াতে ২৬টি ফগার মেশিনে মশা নাশক ওষুধ ¯েপ্র করা হচ্ছে এবং রাস্তার ধূলাবালি রোধ করার জন্য প্রতিদিন সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পানি ছিটানো হবে।
উল্লেখ্য ঃ- এবারের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা ২০১৮ দুই পর্বের প্রথম পর্ব শুরু আগামীকাল ১২ জানুয়ারি এবং আখেরি মোনাজাতের মধ্যেদিয়ে শেষ হবে ১৪ জানুয়ারি। ৪ দিন বিরতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ১৯ জানুয়ারি এবং আখেরি মোনাজাতের মধ্যেদিয়ে শেষ হবে ২১ জানুয়ারি। বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জেলাওয়ারি মুসল্লীদের জন্য স্থান (খিত্তা) নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রথম পর্বে ২৭টি খিত্তা এবং দ্বিতীয় পর্বে ২৯টি খিত্তা স্থাপন করা হবে। দুই পর্বে দেশের ৩২টি জেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগণ অংশ গ্রহণ করবেন।
যেসব বয়ানের জন্য মাওলানা সাদ বিতর্কিত :- তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হজরত ইলিয়াস শাহ (রাহ.) এর নাতি মাওলানা সাদ’র কিছু বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে বিশ্ব তাবলিগ জামাত দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেছেন ইলিয়াস (রাহ.) এবং এরপর আমিরের দায়িত্বে ছিলেন তার ছেলে মাওলানা হারুন (রাহ.)। মাওলানা জুবায়েরুল আহসানের ইন্তেকালের পর আমিরের দায়িত্বে আসেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী। তাবলিগ জামাতের কোন আমির বা মুরব্বির কোন বয়ান নিয়ে এর আগে এতো বিতর্কের সৃষ্টি হয়নি। যেটি হচ্ছে মাওলানা সাদের দেয়া বিভিন্ন বয়ান নিয়ে। অভিযোগ উঠেছে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় কুরআন, হাদিস, ইসলাম, নবি-রাসুল ও নবুয়ত এবং মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর বয়ান করেছেন। যার জন্য দেওবন্দসহ বিশ্ব আলেমদের অনেকেই এসব বয়ানের জন্য প্রকাশ্যে তাকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন।
তার দেয়া বিতর্কিত বয়ানের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো- ১/ভোটের সময় চিহ্ন হিসাবে (আঙুলে) যে রং লাগানো হয়, তার কারণে নামাজ হয় না। তাই ভোট না দেয়া উচিত। ২/ বিভিন্ন আয়াতে তিনি বলেন, মুফাসসিরিন এই আয়াতের কোনো এক তাফসির করেছেন, ওলামা কোনো এক তাফসির করে থাকেন, কিন্তু আমি এই তাফসির করে থাকি। এটা শুনো। এটাই সঠিক তাফসির! ৩/ ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখা হারাম এবং পকেটে ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রেখে নামাজ হয় না। যে আলেমগণ ক্যামেরাওয়ালা মোবাইল রাখাকে ‘জায়েজ’ বলেন, তারা ‘ওলামায়ে ছু’। বার বার কসম খেয়ে তিনি বলেন, তারা হলো ‘ওলামায়ে ছু’। এমন আলেমরা হলো গাধা ! গাধা ! গাধা ! ৪/ মোবাইলে কুরআন শরীফ পড়া এবং শোনা; প্র¯্রাবের পাত্র থেকে দুধ পান করার মতো ! ৫/ মাদরাসা মসজিদের বেতন বেশ্যার উপার্জনের চেয়ে খারাপ
৬/ কুরআন শরীফ শিখিয়ে বেতন গ্রহণ করেন, তাদের বেতন বেশ্যার উপার্জনের চেয়েও খারাপ। যে ইমাম এবং শিক্ষক বেতন গ্রহণ করেন, বেশ্যারা তাদের আগে জান্নাতে যাবে ! ৭/ কাওমি মাদরাসা বন্ধ করার অপচেষ্টা
৮/ মাদরাসা গুলোতে জাকাত না দেয়া হোক। মাদরাসায় জাকাত দিলে জাকাত আদায় হবে না। ৯/ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর কেবল তিনজন লোকের ‘বাইআত’ পূর্ণতা পেয়েছে। আর বাকি সবার বাইআত অপূর্ণ। সেই ৩ জন হলেন- শাহ ইসমাঈল শহীদ, মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস এবং মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ। ১০/ মাওলানা সাদ সাহেব আযমগড়ের ইজতেমায় এবং অন্যান্য ইজতেমায় একাধিকবার সুন্নাতকে ‘৩ প্রকার’ বলে বর্ণনা করেছেন, ইবাদতের সুন্নাত, দাওয়াতের সুন্নাত এবং আচার-অভ্যাসের সুন্নাত। ১১/ ‘দাওয়াতের পথ’ হলো নবির পথ, ‘তাসাউফের পথ’ নবির পথ না। ১২/ আজান হলো ‘তাশকিল’ (প্ল্যান-পরিকল্পনা)। নামাজ হলো ‘তারগীব’ (পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধকরণ)। আর নামাজের পর আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া হলো ‘তারতীব’ (পরিকল্পনার মূল বাস্তবায়ন)। ১৩/ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাওয়াত ইলাল্লাহর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইশার নামাজকে পর্যন্ত বিলম্ব করে পড়েছেন। অর্থাৎ নামাজের চেয়ে দাওয়াতের গুরুত্ব বেশি। ১৪/ হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম ‘তোমার প্রভুর কাছে আমার কথা বল’ বলে গাইরুল্লাহর দিকে দৃষ্টি দেয়ার কারণে তাকে অতিরিক্ত ৭ বছর জেলখানায় থাকতে হয়েছে। ১৫/ হজরত জাকারিয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহকে ছেড়ে গাছের কাছে আশ্রয় চাইলেন। ফলে শাস্তি ভোগ করতে হলো। ১৬/ মুজিজার সম্পর্ক কেবল দাওয়াতের সঙ্গে। নবুয়াতের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। ১৭/ হজরত মুসা আলাইহিস সালাম থেকে বড় এক ভুল হয়ে গেছে এবং তিনি এক অপরাধ করে ফেলেছেন- জামাআত এবং কাওমকে ছেড়ে তিনি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের জন্য ‘নির্জনতা’ অবলম্বন করেছেন। ১৮/ হজরত মুসা আলাইহিস সালাম কর্তৃক হজরত হারুন আলাইহিস সালামকে নিজের স্থলাভিষিক্ত বানানোও অনুচিৎ কাজ হয়েছে। ১৯/ হেদায়েতের সম্পর্ক যদি আল্লাহর হাতে হতো, তাহলে তিনি নবি পাঠাতেন না।
বিশ্ব ইজতেমা মালয়েশিয়ায় সরিয়ে নেয়ার হুমকি মাওলা. সাদ পহ্নিদের : বিশ্ব তাবলিগ জামাতের বর্তমান আমির মাওলানা সাদের পদ নিয়ে তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। আগামী ১২ জানায়ারি থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমায় তার অংশ গ্রহণ নিয়ে মুরব্বীরা দ্বিধান্বিত। তাবলিগ জামাতের একটি গ্রুপ তার অংশ গ্রহণের বিরোধিতা করছে। এ অবস্থায় মালয়েশিয়া তাবলিগের শুরা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব ইজতেমাকে মালয়েশিয়ায় স্থানান্তরের হুমকি দিয়েছে। তারা বলছেন, যদি মাওলানা সাদকে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমিরের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাহলে বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় স্থানান্তর করা হবে। গত রোববার বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের শুরাকে লেখা এক চিঠিতে মালয়েশিয়া তাবলিগের শুরা কর্তৃপক্ষ এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশের তাবলিগের শুরা সদস্যরা জানান, ইজতেমায় মাওলানা সাদের আসা না আসা নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছে। তবে এটি সমাধানও হয়ে গেছে। তাবলিগ সূত্রে জানা যায়, এবারের ইজতেমায় দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরব্বি মাওলানা সাদ সাহেব আসতে পারবেন কিনা এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাবলিগের শুরা সদস্যদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। গত ২৪ ডিসেম্বর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে বাংলাদেশ থেকে তাবলিগ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বিত একটি প্রতিনিধি দল ভারতে তাবলিগের মূলকেন্দ্র নিজামুদ্দিন ও দারুল উলুম দেওবন্দ সফর করেন। দেশে ফিরে দলটি একটি প্রতিবেদন পেশ করেন। সফরকারী দলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাওলানা সাদ আহলেসুন্নাহ ওয়াল জামাতের মতাদর্শের সম্পূর্ণ পরিপন্থি অসতর্ক হয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার জন্য নিজের ভুল স্বীকার করেন। তবে যেভাবে উনাকে ভুল স্বীকার করতে বলা হয়েছিল তিনি সেভাবে তা করেননি। প্রসঙ্গত, মাওলানা সাদ সাহেব আল্লাহর পয়গাম্বর হজরত মুসা (আ.) সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কাকরাইল মসজিদের একটি সূত্র জানায়, এবারের বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ আসতে পারবেন কিনা এ নিয়ে আলোচনা হয় কাকরাইলের শুরা উপদেষ্টা ও ভারতে সফরকারী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত গত রোববার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছিলো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি অবগত হন তবে কিছু বলেননি। কিন্তু মাওলানা সাদ সাহেবের আসা না আসা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে মতামত আসায় সমাধানের সাথে সভার সভাপতি একটি প্রস্তাবব পেশ করেন। সভাপতি মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান অধিকাংশের মতামতের ভিত্তিতে মাওলানা সাদসহ ৪জন আলেম না এসে তাদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি আসার সিদ্ধান্ত দেন।
ইজতেমায় মাওলানা সাদ এর আসা ও তাকে ঠেকাতে এয়ারপোর্টে বিক্ষোভ : টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের জিম্মাদার মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির আসাকে কেন্দ্র করে বর্তমানে বিমানবন্দর এলাকায় বিক্ষোভ করছেন মুসল্লিরা। গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিমানবন্দরের অদূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বায়তুস সালাম জামে মসজিদ সংলগ্ন চত্বরে এ বিক্ষোভ চলছে। এদিকে ওই চত্বরে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামায় বিমানবন্দর থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়কে তব্র্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দর থানার ওসি নূরে আযম সিদ্দিকী এপ্রতিনিধিকে জানান, বিমানবন্দর গোলচত্বর এলাকায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ করছেন তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা। মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে যেন বাংলাদেশে আসতে দেয়া না হয় সেজন্য তারা বিক্ষোভ করছেন এবং বিভিন্ন শ্লোাগান দিচ্ছেন। তিনি আরো জানান, মাওলানা সাদ কান্ধলভী আজ বেলা সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা তাকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিব।
বিতর্কিত ও আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের অন্যতম আলেমগণ মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে তাবলিগ জামাতের ৫৩ তম বিশ্ব ইজতেমায় না আসার আহ্বান জানায়।
শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে গত ৭ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ীতে জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায় অনুষ্ঠিত তাবলিগের শুরা সদস্য ও আলেমদের বৈঠকে এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদের না আসার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিবর্তে বৈঠকের ফয়সাল নিজামুদ্দিনের দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের আসার সিদ্ধান্ত দেন।
তাবলিগ অনুসারীদের বিক্ষোভ, রাজধানীর উত্তর অংশ অচল : বিশ্ব ইজতেমায় দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে বাংলাদেশে আসা ঠেকাতে বিমান বন্দর এলাকায় বিভিন্ন তবলিগ জামাতের অনুসারীদের বিক্ষোভের কারণে যানজটে অচল হয়ে পড়েছে ঢাকার উত্তরা এলাকা। বিমানবন্দর মোড়ের দুই দিকেই যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে মানুষকে। উত্তরা থেকে ঢাকামুখী যানবাহন যেমন আসতে পারছে না, তেমনি বনানী থেকে উত্তরার দিকেও যেতে পারছে না গাড়ি। এতে দুই দিকের সড়কেই যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লাখো মানুষ। বিমান বন্দর থানা পুলিশ জানায়, এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদের অংশ গ্রহণ নিয়ে তবলিগ জামাতের মধ্যে বিরোধ ছিল। সম্প্রতি টঙ্গীতে ইজতেমার প্রস্তুতি সভায় এই বিষয়টি প্রকাশ পায়। বিরোধিতার মধ্যেও মাওলানা সাদের আজ বুধবার সকালে ঢাকায় আসার কর্মসূচি নির্ধারিত ছিল। কিন্তু সকাল থেকে সাদ বিরোধীরা বিমান বন্দর এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ জানাতে থাকে। আর এক পর্যায়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় পুরোপুরি। মুল সড়কের পাশাপাশি বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসাতেও বিক্ষোভ করতে থাকে ছাত্র-শিক্ষকরা। চাকুরিজীবি সৈয়দ আলী বলেন, ‘আমি জানতাম না কী ঘটনা। পরে সব জানতে পারলাম। ধর্ম নিয়ে এই ধরনের বাড়াবাড়ি কাম্য নয়। তাদের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে আলাপ আলোচনা করে সমাধান করা উচিত। কিন্তু এভাবে সড়কে অবস্থান নিয়ে আমাদের কষ্ট দেয়ার মানে কী ?’।আরেক যাত্রী রুবী আক্তার বলেন, তিনিও খিলক্ষেত থেকে টঙ্গী আসছিলেন, বিমান বন্দর গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে রওয়ানা হতে বাধ্য হয়েছেন। রুবি বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে এই ধরনের কাজ চলছে এটাকে নিয়ে মানুষের মধ্যে যে আবেগ আছে, সেটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মানুষকে কষ্ট দেয়ার কী মানে আছে ? বিমানবন্দর মোড় থেকে উত্তরার দিকেও তীব্র যানজট দেখা গেছে। বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে পুলিশের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সদস্যদের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এদিকে পুলিশের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে আছেন। একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও এ বিষয়ে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাওলানা সাদকে খুঁজতে গাড়িতে গাড়িতে তল্লাশি : বিশ্ব ইজতেমায় দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর আগমন ঠেকাতে বিমানবন্দর এলাকায় সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন তাবলিগ জামাতের একটি অংশ। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে মাওলানা সাদ যেন অংশ নিতে না পারেন সেজন্য ওই পক্ষটি বিমানবন্দরের সামনে বিক্ষোভ করছে। এছাড়া বিক্ষোভ হচ্ছে ঢাকার বেশ কয়েকটি মাদ্রাসাতেও। বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে তাবলিগের দিল্লি মারকাজের শীর্ষ এই মুরব্বি যেন প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য বিভিন্ন গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
সকাল থেকেই তাবলিগের এই অংশটি মাওলানা সাদের খোঁজে বিমানবন্দর থেকে সিভিল এভিয়েশন হেড কোয়াটার্স গেট দিয়ে বের হওয়া সকল যানবাহনে তল্লাশি চালিয়েছে। তাদের তল্লাশি থেকে বাদ যায়নি না অ্যাম্বুলেন্সও। সড়কে অবস্থায় নেয়া বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিয়েছেন। মাওলানা সাদের আগমন, রুখে দাও গুড়িয়ে দাওসহ বিভিন্ন ধরনের শ্লোগানে উত্তাল ছিলো বিমানবন্দর চত্বর।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ