News Bangla 24 BD | ব্রণ হলে যেসব খাবার খাবেন না
News Head

বয়ঃসন্ধিকালে অনেকেরই সৌন্দর্য নাশে প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় এই ত্বকের সমস্যাটি। ছেলে হোক কী মেয়ে, সবার মুখে মুখেই তখন একটা কথা ঘুরপাক খেতে থাকে, কিভাবে দূর করবো এমন মুখের দাগ? কিন্তু দুঃখের বিষয় হাজারো কসমেটিক্স ব্যবহারের পরেও মেলে না সুরাহা! দাগগুলি যেন যেতেই চায় না। আর কেন এমনটা হয় জানেন? আসলে অ্যাকনে বা ব্রণ হল এমন এক ধরনের ত্বকের রোগ, যাকে স্কিনের অন্দর থেকে না সারালে বাড়ে বাড়ে আক্রমণ করতে থাকে। তাই তো নানা কসমেটিক্স ব্যবহারের পরেও মুখের দাগ মিটতে চায় না।

এখন প্রশ্ন হল ব্রণকে তাহলে সমূলে নিকাশ করা যায় কিভাবে? এমনটা যদি বাস্তবেই করতে চান, তাহলে নজরে ফেরাতে হবে ডায়েটের দিকে। কারণ প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা যা যা খাই তার সঙ্গে ত্বকের ভাল মন্দের একটা গভীর যোগ রয়েছে। যেমনটা রয়েছে ব্রণর সমস্যার সঙ্গেও। সেই কারণেই তো ব্রণ বা অ্যাকনের মতো ত্বকের সমস্যা দেখা দিলে কতগুলি খাবার একেবারে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ তাদের মতে এই খাবারগুলি ব্রণর উপদ্রব শুধু বাড়ায় না, সেই সঙ্গে সমস্যাটিকে আরও জটিল করে তোলে। তাই এক্ষেত্রে চোখ বুজে যে যে খাবারগুলি এড়িয়ে চলতে হবে, সেগুলি হল:

১. গরুর দুধ:
২০১০ সালে হওয়া এই সম্পর্কিত বেশ কিছু গবেষণায় পর একথা একেবারে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গেছে যে গরুর দুধের সঙ্গে ত্বকের এই বিশেষ এই সমস্যার বাড়া-কমার সরাসরি যোগ রয়েছে। একদল গবেষেকের মতে গরুর দুধ খাওয়া মাত্র রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনসুলিনের মাত্রাও বেড়ে যায়। ফলে দেহের অন্দরে প্রদাহের মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে ব্রণর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে। তাই ব্রণয় ভুগলে ভুলেও দুধ খাওয়া চলবে না কিন্তু!

২. চিনি:
বেশি মাত্রায় চিনি খেলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে দেহের অন্দের চিনির মাত্রা বাড়া মাত্র ত্বকের উপর তার প্রভাব পরতে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে স্কিন ব্রেক হতে শুরু করে। আর সেই সুযোগে জীবাণুর প্রকোপ এত মাত্রায় বেড়ে যায় যে শুধু ব্রণ নয়, সেই সঙ্গে আরও সব ত্বকের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাই ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে যতটা সম্ভব কম মাত্রায় চিনি খেতে হবে।

৩. হাই গ্লাইসেমিক খাবার খাওয়া চলবে না:
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বলে একটি মাপকাঠি আছে। এই মাপকাটি অনুযায়ী প্রতিটি খাবারের চরিত্র নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সাধারণত যে যে খাবার, গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের একেবারে উপরের দিকে থাকে, সেই সব খাবার খেলে সাধারণত রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে যায়। আর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের একেবারে নিচের দিকে থাকা খাবার খেলে ঘটে একেবারে উল্টো ঘটনা। তাই তো ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে সাদা পাঁউরুটি, চকোলেট কর্নফ্লেক্স, ভাত, চিপস, কুকি এবং কেকের মতো হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ফুড খেতে থাকলে শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রণর মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।

৪. ভাজা জাতীয় খাবার:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বেশি মাত্রায় ভাজা জাতীয় খাবার খেলে ইফ্লেমেশনের আশঙ্কা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে হরমোনাল ইমব্যালেন্স দেখা দেয়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে শরীরের অন্দরে এমনটা হতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রণর মতো ত্বকের রোগের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু খাবারের সঙ্গে ব্রণর সমস্যা বাড়ার যেমন যোগ রয়েছে, তেমনি এমনও কিছু খাবার আছে, যা নিয়মিত খেলে অ্যাকনের মতো ত্বকের রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। যেমন:

*মাছ:
এর অন্দরে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখাতে শুরু করে যে একদিকে যেমন হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হওয়ার কারণে শুধু ব্রণ নয়, কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে বলি রেখাও দূর হয়। ফলে ত্বকের উপর বয়সের ছাপ পড়ার আশঙ্কা কমে।

*গ্রিন টি:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এই পানীয়টি ত্বকের অন্দরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে পরিবেশে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদানের হাত থেকেও স্কিনকে প্রতি মুহূর্তে রক্ষা করে চলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনও ধরনের ত্বকের রোগ হওয়ার আশঙ্কা দূর হয়।

*ফল:
ত্বককে যদি সুন্দর রাখতে হয়, তাহলে বেশি বেশি করে ফল খেতে হবে। সেই সঙ্গে যোগ করতে হবে সবুজ শাক-সবজিকেও। কারণ এই ধরনের খাবারের পরিমাণ রোজের ডায়েটে বেশি থাকলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি সহ উপকারি উপাদানদের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শুধু ত্বক নয়, সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শরীরের সৌন্দর্য এবং কর্মক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ