আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে ঝিনাইদহে খেজুর রস, গুড় ও পাটালি রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পতিত জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে খেজুর বাগান গড়ে তুলছে। যে কারনে কালীগঞ্জ উপজেলায় খেজুরের গুড় ও পাটালির উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে গুড় ও পাটালি উৎপাদন হচ্ছে। এখানে উৎপাদিত গুড় পাটালি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে খেজুর রস, গুড় ও পাটালি প্যাকেটজাত করে বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন এলাকাবসী। বৃহত্তম কুষ্টিয়া, যশোর-ঝিনাইদহ অঞ্চলে আগে গুড় থেকে চিনি তৈরির ১১৭টি কারখানা ছিল। পরে তা কমে ৫০ এর কোটায় নেমে আসে। ধীরে ধীরে খেজুর গুড় থেকে চিনি তৈরির কারখানা গুলো প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি উপজেলার কৃষকদের মাঝে তাদের পতিত জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে খেজুর বাগান তৈরির প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলার রামনগর গ্রামের বাবলু, মহিদুল ইসলাম, ঈশ্ববার গ্রামের রোস্তম আলী ও চাঁচড়া গ্রামের আক্কাচ আলী জানান-খেজুর গাছের বাগান তৈরি করতে বেশি যতœ এবং সময়ের প্রয়োজন হয় না। খেজুর গাছ কাটা যুক্ত হওয়ায় গরু-ছাগলের উৎপাত কম হয়। একটি খেজুর গাছ ৪/৫ বছর বয়স থেকে রস দিতে শুরু করে এবং তা ৪০/৫০ বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। শীত মৌসুম শুরু হলেই গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত থাকে। একটি খেজুর গাছ থেকে এক মৌসুমে ১৫/১৬ কেজি গুড় পাওয়া যায়। সেই হিসেবে শীত মৌসুমে কালীগঞ্জে প্রচুর পরিমাণে গুড় উৎপাদিত হয়। এই গুড় এই অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। শীত মৌসুমে এ উপজেলা থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০/১২ ট্রাক গুড় দেশের বিভিন্ন শহরে চালান হয়। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান জানান, আগের তুলনায় বর্তমানে কৃষকরা খেজুর বাগান গড়ে তুলতে আগ্রহী হচ্ছেন। তাই সরকারি ভাবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে খেজুর রস, গুড় ও পাটালি প্যাকেটজাত করার মাধ্যমে রপ্তানি করলে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।