মধৃু চাষিদের আগমনে মুখর শ্রীপুরের লিচুবাগান গুলো
শ্রীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় “লিচুপাড়া” নামে খ্যাত কয়েকটি গ্রামে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধু চাষিরা(মৌয়াল) জরো হয়েছেন। তারা সাজিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমান মধু চাষের পসরা। সেখানে মৌমাছির গুড়াগুড়িতে চারদিকে ভন ভন শব্দ। গাছের নিচে সারি সারি করে সাজানো মৌমাছির বাক্স।
লিচু বাগান গুলোতে সকাল থেকে রাত অবদি চলছে মধু আহরণ।এতে শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মধু চাষের কারনে বাড়ছে লিচু উৎপাদনের পরিমান। ফলে বেশি লাভবান হচ্ছেন মৌসুমি মৌচাষি ও লিচু বাগান মালিকরা।
প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে লিচু গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ফেব্রুয়ারী মাসের শেষের দিকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌসুমি মধু চাষিরা লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে বাগানগুলোতে মধুর চাক( মৌ বাক্স) নিয়ে জড়ো হন। লিচু বাগানে সারি সারি করে বসিয়ে দেন মৌমাছিভর্তি বাক্স। এ পদ্ধতিতে এক মাসের বেশি সময় চলে মধু সংগ্রহের কাজ।
সরেজমিনে উপজেলার কেওয়া বেপারীপাড়া আব্দুল কাদিরের বাড়ির উঠানে সারি সারি করে সাজিয়ে রেখেছেন ২৮টি মৌমাছির বাক্স। সকাল বেলা চলছে মৌ বাক্স থেকে মধু সংগ্রহের কাজ। মৌচাষি উপজেলার চকপাড়া গ্রামের আজিজুল হকের সাথে কথা হয় । তিনি বলেন ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি লিচুর ফুলের মধু আহরনের জন্য বাগানে মৌ বাক্স স্থাপন করেছি। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে মধু সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সাত দিন পর পর সকালে চলে মৌ বাক্স থেকে মধু সংগ্রহের কাজ। তিনি প্রতি সপ্তাহে ২৮ টি মৌ বাক্স থেকে ৯০কেজির মতো মধু সংগ্রহ করতে পারেন। ২৮টি মৌ বাক্সের মধ্যে ৩টি রয়েছে বড় মৌ বাক্স । বড় বাক্সে শ্রমিক মৌমাছির সংখ্যা বেশী। বড় বাক্সে প্রতি সপ্তাহে ১৫ কেজি করে মধু সংগ্রহ করা যায়। কথা হয় উপজেলার আনসার টেপিরবাড়ি বাজার সংলগ্ন লিচু বাগানে মৌ বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষি মোহাম্মদ আলীর সাথে। তিনি জানান, ৮০টি মৌ বাক্স তিনি সারি সারি করে সাজিয়ে রেখেছেন। তিনি ৮০টি মৌ বাক্স থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০০ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পারেন। তিনি আরো বলেন এক সময় মৌচাষের দূরদিন ছিল। বাগান মালিকরা মৌ বাক্স বসাতে দিতেন না। বিনিময়ে টাকা দাবী করতেন। মালিকদের ধারনা ছিল মৌমাছি ফুল নষ্ট করে ফেলবে। লিচুর উৎপাদন কমে যাবে। এখন পূর্বের ধারনা পাল্টে গেছে।তারা এখন বুজতে পেরেছে মৌমাছি ফুলের পরাগায়ন ঘটায়। উৎপাদন বেশী হয়। ফলে বাগান মালিকরা এখন মৌ বাক্স বসানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে।
লিচু বাগান মালিক উপজেলার কেওয়া গ্রামের আবুবকর সিদ্দিক আকন্দ সোহেল বলেন,লিচু বাগানে মৌচাষ করলে লিচু উৎপাদন বেশী হয়। আর মৌচাষিরা মধু বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হয়।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম মূয়িদুল হাসান বলেন, মৌমাছি ফুলের পরাগায়ন ঘটায়। ফলে লিচুর উৎপাদন বৃদ্ধি করে। মৌচাষে লিচু বাগান মালিক ও মৌচাষিরা বেশী লাভবান হচ্ছে।