News Bangla 24 BD | গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত
News Head

গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত


অতিরিক্ত জরিমানা ও বাড়তি ফি আদায়ের প্রতিবাদসহ তিন দফা দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করেছেন গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গত ২০ মে ক্লাসের উপস্থিতির ওপর জরিমানা আদায়ে নোটিশ জারি হওয়ার পর গত ২২ মে আন্দোলনে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে যদি কোনো শিক্ষার্থী ৮০% এর নিচে ক্লাসে উপস্থিত থাকে তাহলে তাকে জরিমানা দিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে হবে। শ্রেণিকক্ষে ৭০-৭৯% উপস্থিতি হলে দুই হাজার টাকা এবং ৬০-৬৯% উপস্থিতি হলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে প্রতি কোর্সের জন্য। ফলে প্রতি টার্মে জরিমানা স্বরূপ শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং বাৎসরিক ৩০ হাজার টাকা থেকে ৯০ হাজার পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা রোববার গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি জমা দিয়েছি কিন্তু শিক্ষকরা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেননি এবং আজ তারা আমাদের আন্দোলনে এসে বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেন। আমাদের দাবিগুলো স্পষ্ট ও সহজ হলেও তারা বিভিন্ন যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিষয়টাকে জটিল ও অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন। এর প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীরা সমস্বরে তাদের দাবিগুলো আবার পড়ে শোনান আর দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সোমবারের কর্মসূচি শেষ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দেশের ১৩তম এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি স্বায়ত্তশাসনের নামে শিক্ষার্থীদের প্রতি স্বৈরাচারী আচরণ করে যাচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েও এখন পর্যন্ত কোর্স ক্রেডিট সিস্টেমে বছরে তিনটি টার্ম শেষ করে। প্রতি টার্ম শুরুর ১৭ দিনের মাথায় ১ম মিড, ১ম মিড শেষ হবার ১৫ দিনের মাথায় ২য় মিড, আবার ২য় মিড শেষ হবার ২৭ দিনের মাথায় ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই মিডের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস, ল্যাব ক্লাস, কুইজ পরীক্ষা যথারীতি চলতে থাকে। পাশাপাশি ৮০% ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয় না।
তাদের অভিযোগ, বছরে তিনটি টার্মের ( প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মত) শুরুতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছে ফি বাবদ প্রায় ১২ হাজার টাকা নেয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হটকারিতা, স্বৈরাচারিতা, দুর্নীতি ইত্যাদির জন্য শিক্ষার্থীদের জীবন অতিষ্ট। এর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই প্রশাসন বিভিন্নভাবে ছাত্রছাত্রীদের হুমি দেয় ও বিভিন্ন অজুহাতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ জানান, ২০০৫ সাল থেকে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট এবং ১৯৯১ সাল থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েটদের জন্য ওই বিধান চলে এসেছে। ওই বিধান অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ৮০ শতাংশের নিচে হলে কেউ পরীক্ষাই দিতে পারতো না। কিন্তু পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় সেক্ষেত্রে নির্ধারিত জরিমানা ধার্য করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। যা আগামী জুলাই থেকে চালু হবে। গত ২০ মে এ বিষয়ে অফিস আদেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ জরিমানার বিধান রয়েছে। আর টার্ম পরীক্ষার বিষয়টিও আগে থেকেই চালু আছে, যা আমেরিকার কোর্স ক্রেডিট সিস্টেম অনুযায়িী চলছে। সম্পূর্ণ আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসমুখী করতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব থেকে এটি করা হয়নি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ