টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার খিত্তা ৮৭টি, থাকবে ২০টি প্রবেশ ও বাহির পথ
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে এবারের ৩ দিনব্যাপী দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা আগামি ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে। ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য ২০টি পথ তৈরী করা হয়েছে। এবার পুরো ইজতেমা ময়দানকে ৮৭টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এতে ৬৪টি জেলার মুসুল্লিরা খিত্তা অনুসারে অংশ নেবেন। এর মধ্যে ঢাকা জেলার জন্য ২৩টি খিত্তা এবং ময়মনসিংহ জেলার জন্য দুটি খিত্তা রাখা হয়েছে। বাকী সকল জেলা একটি করে খিত্তায় থাকবে। এবারের বিশ্ব ইজতেমা আগামি ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১২ জানুয়ারি প্রথম পর্ব বা মাওলানা যোবায়ের পন্থীদের পর্ব শেষ হবে। এর পর চার দিন বিরতি দিয়ে ১৭ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা বা মাওলানা সা’দ পন্থীদের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে। দুপর্বেই আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
পুরো ময়দানে বসানো হয়েছে সাড়ে চার’শ সিসি ক্যামেরা। মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ উপস্থিত থাকবেন। থাকবে জেলা প্রশাসনের ৩০টির বেশী ভ্রাম্যমান আদালত। মাঠে নিয়োজিত থাকবে বোমা ডিসপোজল টিম। ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় বিজিবি সদস্য রিজার্ভ রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে মোতায়েন করা হবে।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন করার লক্ষে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন। এ লক্ষ্যে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস.এম. তরিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে গত ২৪ ডিসেম্বর এক প্রস্তুুতিমূলক সভা গাজীপুর সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ইজতেমার আয়োজনে করণীয় নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আগামি ৭ জানুয়ারির মঙ্গলবারের মধ্যে ইজতেমা ময়দানের আনুষাঙ্গিক যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ইজতেমায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, যানজট নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য সেবা, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতসহ মুসল্লিদের বিভিন্ন সেবা বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ইজতেমা মাঠের পুরো এলাকাই বাঁেশর খুটি পোতা হয়েছে। মাঠের পশ্চিম পাশর্^ থেকে চটের সামিয়ানা টাঙ্গানো এবং মঞ্চের কাজ শেষ পর্যায়ে।
মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য ৩১টি পাকা বিল্ডিংএ ৮ হাজার ৩৩১টি টয়লেট থাকবে। ১৭টি গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা ও তিনটি গ্রীড থেকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। রাখা হয়েছে ৪টি শক্তিশালী জেনারেটর। থাকবে মুসল্লিদের পারাপারের জন্য তুরাগ নদীর উপর ৭টি ভাসমান সেতু। মুসল্লিদের জন্য ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু এবং সকল ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রাবিরতি করবে। স্টেশনে বিক্রি হবে তিন স্তরে টিকেট। এছাড়া স্টেশনে মুসল্লিদের জন্য আলাদা অস্থায়ী বিশ্রামাগার ও ১০০টি টয়লেট তৈরী করা হবে।
ইজতেমা ময়দানের মুরুব্বি মাওলানা মাহফুজুর রহমান ও হাজী রেজাউল করিম জানান, বিশ্ব ইজতেমা প্যান্ডেলের কাজ স্বেচ্ছাশ্রমের মধ্য দিয়ে চলছে। মাঠে চটের সমস্যা ছিল কিন্তু গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম তার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আশা করছি ইজতেমা শুরুর আগেই প্যান্ডেলসহ মাঠের সকল কাজ সম্পন্ন হবে। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করতে ছুটে আসেন তারা আল্লাহকে রাজী খুশি করতেই মাঠে কাজ করছেন।