ঝিনাইদহে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ী দৌড় প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ সদও উপজেলার গান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব এর আয়োজনে দিনভর গ্রাম বাংলায় কৃষি পণ্যের বাহন গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন দেখতে মাঠে ভীড় করেছিল হাজার হাজার দর্শক। সকাল থেকেই যতœআত্তি চলে প্রতিযোগীদের। এখন আর হালচাষে গরু নয়। রীতিমত মনিবের মর্যাদার লড়াইয়ে নামতে হয়েছে গরুর। আর যা দেখতে ঝিনাইদহসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার দর্শক আসতে শুরু করে। দুপুর গড়াতেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। ৬ টি সারিতে ১ কিলোমিটার দুর থেকে শুরু হয় দৌড়। একে অপরকে পিছনে ফেলতে গাড়োয়ানরা যেন ঝড়ের গতিতে চালায় গাড়ি। দৌড়ের সাথে সাথে যেন উল্লাসে মেতে ওঠে দর্শক। নির্মল এ চিত্ত বিনোদন বিমোহিত করে আগতদের। রোমাঞ্চকর এ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে আয়োজন করা হয় আনন্দ মেলারও। আসে নাগরদোলা, নানা পণ্য সামগ্রীর দোকান। অনেকে আগে এসেছে আবার অনেকে জীবনে প্রথম এ প্রতিযোগিতা দেখে চরম খুশি। ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি থেকে যাওয়া হাসান আলী নামের এক দর্শক বলেন, আমি জীবনের প্রথম এই গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা দেখছি। দেখে আমি খুবই খুশি। এ ধরনের আয়োজন প্রতিনিয়ত করার দাবী তার। সদর উপজেলার হলিধানী এলাকা থেকে যাওয়া মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় অনুসঙ্গ গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা যে এত মনমগ্ধকর তা না দেখলে বোঝা যেত না। সত্যিই উপভোগ্য এ প্রতিযোগিতা। কালীগঞ্জ থেকে আসার আরিফ মোল্লা নামের এক দর্শক বলেন, গরুর গাড়ীর দৌড় প্রতিযোগিতা হবে শুনে সকালেই বেতাই গ্রামে এসেছি। এখানে শুধু ঝিনাইদহ নই, আশপাশের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার দর্শক এসেছে। এ যেন কৃষক ভাইদের এক মিলন মেলা। দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় ঝিনাইদহ, যশোর, চুয়াডাঙ্গা,মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা, সাতক্ষীরা, ও খুলনা থেকে মোট ৫৬ টি গরুর গাড়ি এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় বেতাই গ্রামের আমিরুল খান ও ২য় হয় যশোরের বাঘারপাড়ার মশিউর রহমনের গাড়ি। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে বিতরণ করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র আলহাজ সাইদুল করিম মিন্টু। তিনি বলেন, সমাজকে অন্যায়, অপরাধ থেকে দূরে রাখতে আর ভবিষ্যত প্রজন্মকে জানান দিতে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে এ ধরনের প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজন করা উচিত। এ ব্যাপারে আয়োজক গান্না ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব বলেন, হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে আর তা বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতেই এই আয়োজন। সরকারিভাবে পৃষ্টপোষকতা পেলে প্রতিবছর এ ধরনের আয়োজন করার আশ্বাস দেন তিনি।