বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) নিজের বিদায়ী সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
বিদায়ী সংবর্ধনায় প্রধান বিচারপতি বলেন আমি অবনত মস্তকে পরম করুণাময় আল্লাহর নিকট গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যিনি আমার মতো একজন সাধারণ মানুষকে বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করেছেন। আজকের এই দিনটিও আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এ কথা অনস্বীকার্য যে মামলার সংখ্যা বিবেচনায় আমাদের বিচারকের সংখ্যা অপ্রতুল। মামলাজট নিরসনে দেশের অধস্তন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত বিচারকের সংখ্যা পর্যায়ক্রমে দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। জেনে খুশি হয়েছি যে উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার কাজ শুরু করেছে।
ভার্চুয়াল কোর্ট নিয়ে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ফিজিক্যাল কোর্টের মতো তেমন অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে ফিজিক্যাল এবং ভার্চুয়াল কোর্ট যুগপৎভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করলে বিচার নিষ্পত্তি আরো দ্রুততর হবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস হলো জনগণের আস্থা। এটা হলো বিচারকদের সততা, সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতার প্রতি গণমানুষের অবিচল বিশ্বাস। সাধারণ মানুষের এই আস্থা অর্জনের জন্য বিচারকদের একদিকে যেমন উঁচু নৈতিক মূল্যবোধ ও চরিত্রের অধিকারী হতে হবে, তেমনি সদা বিকাশমান ও পরিবর্তনশীল আইন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও সামাজিক মূল্যবোধ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
৩০ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। মহান বিজয় দিবস, সাপ্তাহিক ছুটিসহ কাল বৃহস্পতিবার থেকে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরু হচ্ছে। এ হিসাবে আজ তার বিচারিক জীবনের শেষ কার্যদিবস।
প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের আগে তাকে সংবর্ধনা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আইনজীবী মহা. শফিক উল্লাহ। এ সময় আইনজীবীদের উপস্থিতিতে পুরো কোর্ট রুম ভরপুর ছিল। তবে দাওয়াত না দেয়ায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জন করেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।