
খুব ভোর, দক্ষিণের বাতাসে ভেসে আসা লাশের গন্ধ।
ঠা ঠা আওয়াজে সন্ত্রস্ত চারিদিক।
এরই মাঝে হাত টেনে ধরে প্রেয়সীর বাধা।
কোথায় যাচ্ছো এত ভোর করে?
ছয় মাসের বাচ্চাটাকে একা ঘরে রেখে?
তাকিয়ে মুখপানে, প্রেয়সী কি অবুঝ তুমি?
পাও না হাহাকারের শব্দ, বিবস্ত্র নারীর ক্রন্দন, শিশু লাশের গন্ধ?
হুম পাই, তাতে কি?
হাহাহা, এমন উন্মাননা কেন তুমি?
পরাধীনতার শেকলে আবদ্ধ তোমারও শিশু সহস্র,
লক্ষ, কোটি জনতার সিক্ত অশ্রু দেখব কি চোখ চাহি?
বড্ড দেরি হয়ে যাচ্ছে, ছেড়ে দাও হাতের বাধন।
আরও অনেক ওরা অপেক্ষায় আজি।
এই নাও হয়ত শেষ চুম্বন
হয়ত মিলব আবার পেয়ে স্বাধীন ভূমি।
ও চলে যায় দূর পথ পাড়ি।
ছয় মাসের বাচ্চার ক্রন্দন রুখিতে না পারে।
প্রেয়সী অশ্রু চাহি।
বুকের মানিক জড়িয়ে বুকে নির্ঘুম অমানিশা কেটে যায়।
হঠাৎ জানালা হতে দেখা যায়, রহিমার বাড়ি অনলে ধ্বংস।
মর্টারের শব্দে ভেসে আসে মৃত্যুর সংগীত।
আজ কেটে গেছে দুই মাস
কতদিন দেখা হয়নি প্রিয়তম’র মুখ।
মায়ের বাড়ির দীর্ঘ অবস্থান নিরাপত্তা দিলেও দেয়নি অন্তর সুখ।
হিংস্রতার ঢেউ হঠাৎ আছড়ে পড়ে
সব নিরাপত্তা লুকোচুরি তছনছ করে।
প্রকম্পিত চিৎকার অভিশপ্ত বাণী
তারপর গুলির শব্দ বিবস্ত্র নিস্তব্ধতা,
খবর পেয়ে ছুটে আসে ওর চাক্ষুষ শকুনে লুন্ঠিত প্রেয়সী।
ওর আজ আট মাস হয়েছে,
নিষ্পলক দৃষ্টিতে দেখছে সংগ্রামীকে
অশ্রু লুকিয়ে জড়িয়ে বুকে বুঝতে দেয়নি,, বাবা ভীরু।
প্রতিশোধ স্পৃহা আরও দুর্নিবার আরও মজবুত আঘাতে আঘাতে
যেন তপ্ত লোহা হঠাৎ আগলে রাখা বুকের মাঝে ক্রন্দন ধ্বনি
ও যেন ধ্বনি নয় বিদ্রোহী সংগীত
বাহু পেশি জেগে ওঠে উদ্দীপনার নাচন খেলে যায়।
শিরায় বয়ে যায় সংগ্রামী রক্ত
বুকের মানিক রেখে শাশুড়ির কাছে
নতুন উদ্যমী সংগ্রামী ছুটে যায়
আরও সাত মাস পেরিয়ে যায়
ওর আজ ১৫ মাস হলো
বাবা ফেরেনি আর
তবে রেখে গেছেন এক স্বাধীন ভবিষ্যৎ। ——–মো: আরাফাত ইসলাম নিলয়